চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে শাসনের জেরে শিক্ষককে কুপিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রের বিরুদ্ধে। বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ঐ শিক্ষক।
রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার হাইতকান্দি ইউনিয়ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত আবু ইউসুফ একই ইউনিয়নের চার নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম হাইতকান্দি গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। তিনি উপজেলার সাহেরখালী উচ্চ বিদ্যালয়ে কর্মরত। অভিযুক্ত মো. ইউনুস ২০২১ সালে ঐ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
জানা গেছে, ২০২১ সালে বিদ্যালয়ে পড়াকালীন শ্রেণিকক্ষে গোলযোগ করায় ছাত্র ইউনুসের বিরুদ্ধে তৎকালীন প্রধান শিক্ষকের কাছে নালিশ দেন শিক্ষক আবু ইউসুফ। তখন প্রধান শিক্ষক তাকে ডেকে শাসন করেন। এরপর থেকেই শিক্ষক আবু ইউসুফকে কোথাও দেখলে গালাগাল ও হুমকি দিতেন ইউনুস।
সর্বশেষ রোববার বিকেলে বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার পথে শিক্ষক আবু ইউসুফের গতিরোধ করেন ইউনুসসহ কয়েকজন। এ সময় আবু ইউসুফের ওপর হামলা চালান তারা। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি বিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে গিয়ে তাকে অবহিত করেন শিক্ষক আবু ইউসুফ। প্রধান শিক্ষকের বাড়ি থেকে ফেরার পথে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আবারো তার ওপর হামলা চালান ইউনুসরা।
দুই দফা হামলা চালিয়েও ক্ষান্ত হননি ইউনুস ও তার সঙ্গীরা। আবারো সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শিক্ষকের বাড়িতে গিয়ে তাকে কুপিয়ে আহত করেন তারা। এ সময় আবু ইউসুফকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হন ছোট ভাই মো. ইউনুস। পরে আহত অবস্থায় আবু ইউসুফকে উদ্ধার করে মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রোববার রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
শিক্ষক আবু ইউসুফের ভাই মো. ইউনুছ বলেন, দুই বছর আগে শাসনের জের ধরে এ হামলা চালিয়েছেন ইউনুস। রোববার বিকেল ৪টা থেকে তারা দফায় দফায় আমার ভাইয়ের ওপর হামলা চালান। শেষ পর্যন্ত সন্ধ্যায় বাড়িতে এসে ভাইকে কুপিয়ে জখম করেন। এ সময় ভাইকে বাঁচাতে গেলে আমাকেও জখম করেন। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করার প্রস্তুতি চলছে।
সাহেরখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেজবাউল হক বলেন, মাত্র কয়েকদিন আগে আমি সাহেরখালী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। যতটুকু জেনেছি ২০২১ সালে ইউনুস নামে ঐ ছাত্র শ্রেণিকক্ষে গোলযোগ করায় তাকে শাসন করা হয়। ঐ ঘটনার জেরে রোববার শিক্ষক আবু ইউসুফের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলার প্রতিবাদে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে দোষীদের শাস্তির দাবিতে কর্মসূচি পালন করা হবে।
মীরসরাই থানার ওসি মো. কবির হোসেন বলেন, হাইতকান্দিতে মারামারির ঘটনা শুনেছি। হামলায় আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
