Countrywideদৈনিক খবর

স্ত্রীকে ফোন করে বলে শোনো দোকানে আগুন ধরছে, মারে কয়ে দিও, এরপর থেকে নিখোজ রাজীব, থামছে না মা-বউয়ের আহাজারি

রাজধানীতে বিগত কয়েক মাসের মধ্যে একাধীক অগ্নিকান্ডে ঘটনা ঘটেছে। তবে এবার মত এত ভয়াবহ রূপ নেয়নি। ব্যাসায়ীদের কোটিটাকার মালামাল সব পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিট। 

এছাড়া সেনাবাহিনীর একটি সম্মিলিত ত্রাণ দল ইতোমধ্যে সেখানে পৌঁছেছে। এর আগে বিমান বাহিনীর ফায়ার সার্ভিস যোগ দেয়।

মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে বঙ্গবাজারের এনেক্স মার্কেটের পাশের টিনশেড মার্কেটে আগুন লাগে।

আগুনের খবর পেয়ে বঙ্গমার্কেটের দোকানিরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। দোকান থেকে যতটা সম্ভব কাপড় বের করার চেষ্টা করছে সবাই। তবে আগুনের তীব্রতা বেশি থাকায় আশেপাশে যেতে পারেননি বলে জানিয়েছেন অনেক দোকানি।

তাদের মধ্যে মোঃ রাজীব দেওয়ান একজন দোকানদার। তার বাড়ি বিক্রমপুরে। সেখান থেকে সকালে দোকানে যাওয়ার সময় বঙ্গবাজার বাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা জানতে পারেন তিনি। স্ত্রীকে ফোনে আগুনের কথা জানান তিনি। এরপর থেকে তার ফোন বন্ধ। রাজীবের কোন সন্ধান না পেয়ে তার স্ত্রী ও মা বঙ্গবাজার বাজারে এসে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন।

এদিকে রাজীবের স্ত্রী বলেন, আমার স্বামীর নাম মোঃ রাজীব দেওয়ান। তার দোকান বঙ্গবাজার মার্কেটে। আজ সকালে 7:25 এ আমার সাথে কথা হয়েছিল। তিনি আমাকে ফোনে ফোন করে বাজারে আগুনের খবর দেন। বাড়িতে সবাইকে জানাতেও বলেন। তুমি কোথায় জানতে চাইলে আমাকে বলা হয় আমি বাবুবাজার ব্রিজের নিচে আছি, সেখান থেকে জানতে পারলাম সব শেষ। আমি সেখানে যেতে চাই না, আমি যাই না, দেখুন। তারপর থেকে তাকে ফোনে পাচ্ছি না। ফোন বন্ধ দেখা যাচ্ছে।

রাজীবের মা চিৎকার করে বললেন, আমি আমার ছেলেকে খুঁজে পাচ্ছি না। তার নিজের দোকান আছে। আমাদের বাড়ি বিক্রমপুরে, ওখান থেকে সকালে এখানে আসে। বঙ্গবাজারের নিচতলায় আদর্শ মার্কেটের এক নম্বর লেনে দেওয়ান গার্মেন্টস নামে তার একটি দোকান ছিল।

এদিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে সাতটি পাইপ বসিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের পুকুর থেকে পানি নিচ্ছে ফায়ার সার্ভিস। হলের নিরাপত্তারক্ষী। সুমন জানান, সাড়ে ছয়টা থেকে সাতটি পাইপ বসিয়ে পুকুর থেকে পানি নিচ্ছে ফায়ার সার্ভিস। দমকলকর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে জলের জন্য আমাদের কাছে আসে। পরে আমরা হলের গেট খুলে দেই। তারা সাতটি পাইপ বসিয়ে পুকুর থেকে পানি তুলছে।

বঙ্গবাজার মার্কেটের দ্বিতীয় তলা থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের আগে এ ধরনের দুর্ঘটনা তাদের পথে বসিয়েছে। সবে শুরু হয়েছে ঈদের বাজার। ঠিক তখনই এ ধরনের আগুনে ব্যবসায়ীদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, এই ঈদ মৌসুমে তারা সারা বছরই ব্যবসা করার জন্য অপেক্ষা করেন। কিন্তু আগুনে সব শেষ হয়ে গেল।

ঈদ উপলক্ষে ব্যবসায়ীরা নতুন নতুন সব পোষাক আমদানী করেছিলো মূহুর্তেই সব শেষ। কিছু ব্যবসায়ী কাঁদছে আর বলছে ঈদের জন্য সুধে টাকা ধার নিয়ে দোকানে মাল ভর্তী করেছি  এখন দেনা মিটাবো কি করে।

Related Articles

Back to top button