মনিরা মিঠুর বাসার ঘটনায় নতুন এক ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৩ (ভিডিওসহ)
বাংলা ছোট পর্দার বেশ জনপ্রিয় একজন অভিনেত্রী মনিরা মিঠু। নিপুন অভিনয় দিয়ে প্রায় সাড়া বছরই ভক্তদের মাতিয়ে রাখেন তিনি। তবে গত কয়েকদিন আগেই গুণী অভিনেত্রীর বাসায় ঘটে যায় দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেবুকে একটি স্ট্যাটাসে এ তথ্য নিজেই নিশ্চিত করেছিলেন তিনি।
এ ঘটনায় তার ছেলে মুশফিক ইসলাম বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করেন। মনিরা মিঠুর বাসায় চুরির ঘটনা তদন্ত করছে পুলিশ। থানা ছাড়াও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ ছায়া তদন্ত চালায়। সেই তদন্তের ভিত্তিতে গতকাল গাজীপুরে অভিযান চালিয়ে মনিরা মিঠুর গৃহকর্মী বিলকিস বেগম কনা ও তার দুই সহযোগী রবিউল ইসলাম আউয়াল ও বাপ্পী চন্দ্রকে আটক করে পুলিশ।
ডিবির তেজগাঁও বিভাগের ডিসি মোঃ গোলাম সবুর বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই কাজের মেয়ে পেশাদার চোর বলে স্বীকার করেছে। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর ও ভাটারা থানায় আরও দুটি মামলা রয়েছে। সে দাসীর ছদ্মবেশে বাড়ি থেকে মালামাল, স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। এরপর তিনি নিয়মিত রবিউল বাপ্পির কাছে বিক্রি করেন। মনিরা মিঠুর বাসায়ও কাজ করতো।
ডিসি গোলাম সবুর আরও জানান, মনিরা মিঠুর বাড়িতে চাকরি পাওয়ার সাত দিন পর তিনি চুরির ঘটনা ঘটান। অতিরিক্ত ঘি মিশিয়ে পেয়াজু বানিয়ে বাড়ির সবাইকে খাওয়ান। এরপর মনিরা মিঠুর বাড়ির সবার ডায়রিয়া শুরু হয়। বেশ কয়েকজন সদস্যকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। এ সময় সে বাড়ি থেকে পাঁচ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার ও দেড় লাখ টাকা নগদ নিয়ে পালিয়ে যায়।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট আরেক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, বেশ কয়েকদিন ধরেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়িতে একই কৌশলে কাজ করছে কণা। তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে। প্রথম কয়েকটা দিন বাড়ির লোকজনের কাছে খুব পরিচিত। এরপর বিভিন্নভাবে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা চুরি করে পালিয়ে যায়। কণা একাধিক সিম কার্ড ব্যবহার করে। একে একে প্রতিটি সিমের নম্বর দিয়ে সহযোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন।
পুলিশ বলছে, মনিরা কনা উত্তরায় মিঠুর বাড়ির নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে গিয়ে কয়েকবার কাজ চেয়েছিল। তিনি নিরাপত্তারক্ষীদের মাধ্যমে বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ পান। তবে চাকরি পাওয়ার আগে কোনো ঠিকানার বিবরণ রাখেননি তিনি। পুলিশ জানায়, ব্যস্ত শহরকেন্দ্রিক জীবনে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ বিস্তারিত নাম ঠিকানা সংগ্রহ না করে কাউকে গৃহকর্মী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো সময় বড় ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। এর আগেও বেশ কয়েকবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে গৃহকর্মীদের মালামাল ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এমনকি শ্রমিকদের ছদ্মবেশে এই জঘন্য চোরদের কারণে অনেক প্রাণ গেছে।
এদিকে এ বিষয়ে অভিনেত্রী মনিরা মিঠুর সঙ্গে কথা হলে তিনি সংবাদ মাধ্যমে জানান, সেদিন তার বাসায় কি ঘটেছিল তা তিনি আগেই জানিয়েছন। এখন তিনি আশাবাদী, পুলিশ যা কিছু উদ্ধার করতে পেরেছে, তা আদালতের মাধ্যমে তিনি ফিরে পাবেন।