জাতীয়দৈনিক খবর

বাংলাদেশে ‘মডেল’ নির্বাচন হবে, এ বিষয়ে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাই: মোমেন

বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন যেন অবাধ ও সুষ্ঠু হয় সে বিষয়ে তাগিদ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট অ্যান্থনি ব্লিনকেন। তিনি বলেন, বিশ্ব বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। অবশ্যই আমরা চাইছি যে যাতে তারা (বাংলাদেশ) অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ক্ষেত্রে এই অঞ্চল ও বিশ্বে জোরালো উদাহরণ তৈরি করুক। জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন নিশ্চয়তা দিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশে একটি ‘মডেল’ নির্বাচন হবে। ইতিমধ্যে সরকার সব ধরনের পরিবেশ তৈরি করছে। আর এ বিষয়ে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাই।

এদিকে স্থানীয় সময় সোমবার ওয়াশিংটন ডিসিতে স্টেট ডিপার্টমেন্টে অনুষ্ঠিত একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে তারা এসব কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট অ্যান্থনি ব্লিংকেনের আমন্ত্রণে ওয়াশিংটন সফর করছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। ব্লিংকেন বলেন, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে ব্যাপক পরিসরে, যা বিবেচনায় নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। অর্থনৈতিকভাবে, জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক, জলবায়ু পরিববর্তন থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যসহ প্রভৃতি খাতে দুই দেশ একযোগে কাজ করে আসছে।

মিয়ানমারে সেনা নীপিড়নের মুখে দেশটি থেকে পালিয়ে আসা ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে মানবিক আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেন ব্লিংকেন। তিনি বলেন, আমরা অর্থনৈতিক উন্নয়ন, মানবাধিকারের পাশাপাশি সম্পর্ককে শক্তিশালী ও গভীর করার উপায় খুঁজে বের করার জন্য একসঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ব্লিংকেনের সঙ্গে বৈঠক শেষে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বাংলাদেশে একটি মডেল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে নিশ্চয়তা দিয়েছেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রকে আশ্বস্ত করেছেন।

এছাড়া দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নানা দিক নিয়ে যেমন কথা হয়েছে, তেমনি ব্যবসায় বাণিজ্য, জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়গুলো উঠে এসেছে বৈঠকে। এ ছাড়া বাংলাদেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাওয়া হয়েছে বলে, জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রকে পর্যবেক্ষক পাঠানোর আহবান জানানোর কথা তুলে ধরে মোমেন বলেন, আমরা তোমাদের পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানাই। তোমরা আসো। তবে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দলীয় মনোভাবাপন্ন কেউ যাতে পর্যবেক্ষক না হয়।

এ সময় মোমেন বলেন, নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ শুধু সরকার করতে পারবে না। সেজন্য সব বিরোধী দলকে এগিয়ে আসতে হবে। তাদের অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। তাদের অংশগ্রহণ ছাড়া অবাধ, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হবে না। ইতিমধ্যে সরকার সব ধরনের পরিবেশ তৈরি করছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সন্ত্রাস বিরোধী কার্যক্রম প্রতিরোধ জিরো টরালেন্স দেখাবে বাংলাদেশ। দেশে যে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা যেসব ঘটনা ঘটছে নির্যাতনের বলা হচ্ছে তা বিছিন্ন। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশ সরকারও চায়, এ কারণে সবার সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিতে ভোটের সিস্টেম পরিবর্তন করা হচ্ছে। বৈঠকে বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত পাঠাতে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ জানিয়েছেন বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

Related Articles

Back to top button