খেলাধুলাদৈনিক খবর

এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতল বাংলাদেশ

প্রথম ম্যাচে আইরিশদের বোলিং আক্রমণকে লণ্ডভণ্ড করে রনি তালুকদার ও লিটন দাস ঝড় বয়ে দেন। তাতে হয়েছে বেশ কিছু রেকর্ডও। আজ দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে সেসব রেকর্ডে নতুন করে সংযোজন করলো দুজন মিলে। বৃষ্টিতে কমে আসা ম্যাচে রানের পাহাড় বাংলাদেশের। এরপর বল হাতে সাকিব আল হাসানের কারিশমা, আইরিশদের কপালে জুটেছে ৭৭ রানের বড় হার।

৫ উইকেট নেওয়ার পথে সাকিব আজ আরেক দফা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বনে গেলেন। লিটনের ৮৩ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসের সাথে রনির ৪৪, পাশাপাশি সাকিবের অপরাজিত ৩৮ রান। ১৭ ওভারে বাংলাদেশ স্কোরবোর্ডে ৩ উইকেটে ২০২ রান। যা বাংলাদেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। জবাবে সাকিবের স্পিন বিষে নীল হয়ে আইরিশরা আটকে গেছে ৯ উইকেটে ১২৫ রানে।

এই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই টি-টোয়েন্টি সিরিজটি নিজেদের করে নিল বাংলাদেশ। এ দিন ওপেনিংয়ে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়ে লিটন-রনি। ১৮ বলে বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম ফিফটি লিটনের ব্যাটে। ব্যাট হাতে অপরাজিত ৩৮, বল হাতে ৫ উইকেটে আরও একবার ম্যাচ সেরা সাকিব। নির্ধারিত সময় দুইটায় খেলা শুরু হওয়ার কথা। চট্টগ্রামে যথাসময়ে হয়েছে টসও।

টস জিতে ফিল্ডিং নেয় আয়ারল্যান্ড। এরপরই নামে বৃষ্টি, দুপুর দুইটার পরিবর্তে খেলা শুরু হওয়া র কথা ৩ টা ১৫ মিনিটে। যেখানে কমেছে এক ওভার। কিন্তু আরেক দফা বৃষ্টি এসে খেলা পিছিয়েছে আবারও এবার ১৭ ওভারের ম্যাচটি শুরু হয়েছে ৩ টা ৪০ মিনিটে। স্পিন দিয়ে আক্রমণ শুরু করে আয়ারল্যান্ড। গ্যারেথ ডিলানির প্রথম ওভারে আসে ৮ রান।

পরের ওভারে পেসার মার্ক অ্যাডায়ার দেন ১৩। গ্রাহাম হিউমের করা তৃতীয় ওভারে একটি করে চার, ছক্কায় রনি-লিটন মিলে নেন ১৬ রান।
চতুর্থ ওভারে লিটন আরও আক্রমণাত্মক। এক ছক্কার সাথে হাঁকান দুই চার। ওভারে রান আসে ১৭। পঞ্চম ওভারে তার ব্যাটে দুই চার, এক ছক্কা। ৬ষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়েই ১৮ বলে ছুঁয়েছেন ফিফটি, যা বাংলাদেশের দ্রুততম।

লিটন ভেঙেছেন ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মোহাম্মদ আশরাফুলের করা ২০ বলে ফিফটির রেকর্ড। ৬ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে বিনা উইকেটে ৮৩। আগের ম্যাচে পাওয়ার প্লেতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়া বাংলাদেশ আজ তা আবার ভেঙেছে। সেদিন করেছিল ৮১ রান। লিটনের ফিফটির সাথে সমান তালে ঝড় তুলেছেন রনিও। ৭ম ওভারে হাঁকিয়েছেন দৃষ্টিনন্দন দুই ছক্কা।

৮ম ওভারের প্রথম বলেই দলীয় সংগ্রহ পেরোয় ১০০! আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটি সবমিলিয়ে বাংলাদেশের ৭ম ও ওপেনিংয়ে দ্বিতীয় ১০০ রানের জুটি। ১০ম ওভারে গিয়ে জুটি ভাঙতে পারে আয়ারল্যান্ড। বেনজামিন হোয়াইটকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং-অনে ধরা পড়েন রনি। ২৩ বল ৩ চার ২ ছক্কায় ৪৪ রানের ইনিংসটি সাজান রনি।

লিটনের সাথে ১২৪ রানের জুটিটি সবমিলিয়ে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ও ওপেনিংয়ে সর্বোচ্চ রানের জুটি। এর আগে ওপেনিংয়ে রেকর্ড ছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নাইম শেখ ও সৌম্য সরকারের ১০২ রান। ১০ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে ১ উইকেটে ১৩০। রনির বিদায়ের পর মন্থর হয় বাংলাদেশের রানের গতি। দ্বিতীয় বাংলাদেশী ব্যাটার হিসেবে সেঞ্চুরির পথে হেঁটেও ব্যর্থ হন লিটন। বেনজামিন হোয়াইটের বলে আউট হন ক্যারিয়ার সেরা ৮৩ রানের ইনিংস খেলে। ৪১ বলে ১০ চার ৩ ছক্কায় সাজান ইনিংসটি।

এরপর ২৪ বলে ৩ চার ২ ছক্কায় অপরাজিত ৩৮ ও তাওহিদ হৃদয়ের ১৩ বলে ২৪ রানে বাংলাদেশ পেরিয়েছে ২০০। লক্ষ্য তাড়ায় নামা আইরিশদের প্রথম বলেই হতাশা উপহার দেন তাসকিন আহমেদ। পল স্টার্লিংকে (০) লিটন দাসের ক্যাচে পরিণত হরেন। এরপর সাকিব একে একে তুলে নেন লরকান টাকার (৫), রস অ্যাডায়ার (৬), গ্যারেথ ডিলানি (৬), জর্জ ডকরেল (২) ও এক পাশ আগলে রখা হ্যারি টেক্টরকে (১৬ বলে ২২)। ৪৩ রানে ৬ উইকেটে পরিণত হয় আয়ারল্যান্ড।

ডিলানিকে ফিরিয়ে ১৩৪ উইকেট নিয়ে সাকিব আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে নিউজিল্যান্ডের টিম সাউদির পাশে বসেন। এরপর ডকরেলকে ফিরিয়ে বনে যান এককভাবে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। আর টেক্টরকে বোল্ড করে ব্যবধানটাও বাড়িয়ে নেন।৪ ওভারে ২২ রান খরচায় ক্যারিয়ারের দ্বিতীয়বার ৫ উইকেট নিলেন সাকিব।সেখান থেকে ৩০ বলে ৫০ রানের ইনিংসে কেবল হারের ব্যবধানটাই কমাতে পেরেছে কুর্টিস ক্যাম্ফার। গ্রাহাম হিউম অপরাজিত ছিলেন ২০ রানে। সাকিবের ৫ উইকেটের সাথে তাসকিন নিয়েছেন ৩ উইকেট। হাসান মাহমুদের শিকার একটি।

Related Articles

Back to top button