সারা দেশে তীব্র দাবদাহ, জারি হচ্ছে ‘জরুরি অবস্থা’

বাংলাদেশ এখন পুড়ছে সূর্যের আগুনে।সারা দেশের গরমের পরিস্থিতি একেবারে নাজেহাল করে দিয়েছে দেশের মানুষকে। বিশেষ করে গত কয়েকদিন ধরে রাজধানীসহ সারাদেশে চলছে তীব্র দাবানল। আগামী ৭-৮ দিন বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই। এ অবস্থায় চরম তাপপ্রবাহ সংকট মোকাবিলায় ‘তাপমাত্রা জরুরি’ জারি করা হতে পারে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।

তিনি বলেন, ‘তীব্র গরমে জনজীবনে দুর্বিষহ হয়ে উঠছে।

জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা যায় কি না তা আমরা বিবেচনা করছি। গত দুই দিন শুক্র ও শনিবার অফিস-আদালতে ছুটি ছিল। তাই আগামীকাল ও পরশু (রবিবার ও সোমবার) দুই দিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে। তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ‘

২০১৪ সালের এপ্রিলে রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এবং শনিবার, তাপমাত্রা ৪০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে স্থির হয়, যাকে আবহাওয়াবিদরা ‘চরম’ তাপমাত্রা বলে অভিহিত করেছেন।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল রাজধানী ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গায় – সর্বোচ্চ ৪২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার পর্যন্ত টানা ১৪ দিনে চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

গতকাল চট্টগ্রাম বিভাগের বান্দরবান জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অফিসের মতে, ৩৬ থেকে ৩৭.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে মৃদু, ৩৮-৩৯.৯ ডিগ্রি মাঝারি, ৪০ থেকে ৪১.৯ ডিগ্রি গুরুতর এবং ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রাকে ‘খুব গুরুতর’ হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে।

গতকাল ঢাকা বিভাগের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ফরিদপুর জেলায় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি। সিলেট বিভাগের শ্রীমঙ্গলে সর্বোচ্চ ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২২ দশমিক ৪ ডিগ্রি। রাজশাহী বিভাগে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল নওগাঁর বদলগাশীতে ২২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

রংপুর বিভাগের সৈয়দপুরে তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বরিশালের খেপুপাড়ায় ৩৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি এবং ময়মনসিংহ বিভাগের ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর মিডিয়াম-রেঞ্জ ওয়েদার ফোরকাস্ট (ইপিএমডব্লিউএফ) আজ থেকে পরবর্তী ১০ দিনের পূর্বাভাসে বলছে, ‘আগামী সাত থেকে আট দিন বাংলাদেশে বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই।’

প্রসঙ্গত, রমজানের প্রথম ভাগের পর থেকে শুরু হয় সারা দেশে এ দাবদাহ। আর সেই থেকে টানা গরম আর তাপে জনজীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ।আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. হাফিজুর রহমান বলেন, “খুলনা বিভাগসহ ঢাকা, ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী পাবনা ও পটুয়াখালী অব্যাহত তীব্র তাপপ্রবাহে ভুগছে এবং দেশের অন্যান্য জেলায় মৃদু ও মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে একটি ‘মৃদু’ তাপপ্রবাহ ছিল। কিছু জেলায় পরে ‘মৃদু’ এবং ‘তীব্র’ তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে।

Exit mobile version