রুচির দুর্ভিক্ষ কাটাতে বাসায় শিক্ষক রেখে পড়ালেখা শুরু করেছেন হিরো আলম

বর্তমান সময়ে দেশের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে বহুল চর্চিত নাম হিরো আলম। তিনি যা করেন না কেন, পক্ষে-বিপক্ষে সুশীল সমাজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের মন্তব্য পাওয়া যায়। সেটি আবার দেশজুড়ে আলোচনায় স্থান পায়। বরেণ্য নাট্যকার মামুনুর রশীদ কিছুদিন আগে হিরো আলমকে নিয়ে একটি মন্তব্য করেছিলেন। যেটি তোলপাড় সৃষ্টি করেছিল। শুধু তাই নয়, ‘টক অব দ্য কান্ট্রিতে’ পরিণত হয়েছিল। এর পরই হিরো আলম নিজেকে পরিবর্তন আনা শুরু করেন। সেই লক্ষ্যে বাসায় শিক্ষক রেখে পড়ালেখা শুরু করেছেন এ ইউটিউবার।

এ বিষয়ে হিরো আলম বলেন, সত্যি কথা বলতে— আমার বাসা উত্তরাঞ্চলের বগুড়া জেলা হওয়ায়, আমার জেলার আঞ্চলিকতার ভাষার টান থেকেই যায়। এই আঞ্চলিকতা পরিবর্তন করার জন্য আমাকে অনেকে পরামর্শ দিয়েছেন। তাছাড়া আমার কিছু উচ্চারণে সমস্যা আছে, সবাই বলে হিরো আলম সবকিছু পরিবর্তন করতে পারে। এটিও পারবে। সে জন্য নিজেকে আমি পরিবর্তন করার চেষ্টা করছি। দেখি কতদূর পরিবর্তন হতে পারি। আমার কথা নিয়ে যেহেতু এত মানুষের প্রবলেম, সেটাই আগে ঠিক করব।

তিনি আরও বলেন, সবাই পরামর্শ দিয়েছেন আমি যেন একটু পড়ালেখা করি এবং সুশিক্ষায় শিক্ষিত হন। সেই পরামর্শকে গুরুত্ব দিয়ে একটু একটু করে আমার অফিসে শিক্ষক রেখে শেখার চেষ্টা করছি। অনেকে আমাকে উন্মুক্ত বিশ্ববিদালয়ে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। সেটি তো আর আমার পক্ষে সম্ভব না। কারণ আমি নানা কাজে ব্যস্ত থাকি। আমাকে পরিবার চালানোর জন্য আয় করতে হয়।

তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি আমার কিছু দুর্বলতা ছিল, সেগুলো পরিবর্তন করলে আর কোনো সমস্যা হবে না। আমাকে নিয়ে কেউ আর কথা বলতে পারবে না। কেউ রুচির দুর্ভিক্ষে পড়বে না। রুচির দুর্ভিক্ষ কাটাতে লেখাপড়ার দিকে মনোযোগ দিয়েছি। শিক্ষকের পরিচয় জানতে চাইলে হিরো আলম বলেন, সে শিক্ষকের পরিচয় এখন দিতে চাই না। সময় আসলে আমি বলে দেব। এখন আপাতত বলতে চাচ্ছিনা।

তিনি আরও বলেন, সবাই মনে করেছিল হিরো আলম বদলাতে পারবে না। আমি সেটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি, পরিবর্তন করে দেখিয়ে দেব। ইতোমধ্যে অনেক পরিবর্তন করে ফেলেছি। আর যেটুকু সমস্যা আছে সেটুকু পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি। তবে এটা তো একসঙ্গে সম্ভব না। একটু ধৈর্য নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি।

সম্প্রতি হিরো আলমকে ইঙ্গিত করে নাট্যকার মামুনুর রশীদ এক অনুষ্ঠানে বলেন, আমরা একটা রুচির দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়ে গেছি। সেখান থেকে হিরো আলমের মতো একটা লোকের উত্থান হয়েছে। যে উত্থান কুরুচি, কুশিক্ষা ও অপসংস্কৃতির উত্থান। এই উত্থান কীভাবে রোধ করা যাবে, এটা যেমন রাজনৈতিক সমস্যা, তেমনি আমাদের সাংস্কৃতিক সমস্যাও।

Exit mobile version