শরীরের ভেতরে ঘটে যাওয়া আর পাঁচটা ঘটনা যেমন খাবার হজম হওয়া, নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস, রক্ত সঞ্চালনের মতোই নারীদের পিরিয়ড হওয়া একটি অত্যন্ত স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু বেশির ভাগ মেয়েই পরোক্ষভাবে এখনো পিরিয়ডের দিনগুলোতে ‘শরীর খারাপ’ হয়েছে বলে মনে করেন।
শুধু মনে করা নয়, মুখেও পিরিয়ডকে শরীর খারাপ বলে ডাকেন। মোটামুটিভাবে পিরিয়ডের সময় গড়ে ৩৫ মিলিলিটার রক্তপাত হয়। এই সময়ে যদি কোনো নির্দিষ্ট শারীরিক সমস্যা ছাড়া ক্র্যাম্প বা ব্যথা হতেই থাকে তাহলে কিন্তু শারীরিক সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়।
সুস্থতার নিশ্চয়তা রাখতে হলে প্রথমেই নজর দিতে হবে সঠিক খাবারদাবারের প্রতি। আর তারপরেই আসবে ব্যায়ামের পালা। ব্যায়াম মানে কিন্তু শুধু সিঁড়ি দিয়ে ওঠা বা রাস্তায় ১০-১৫ মিনিট হাঁটা নয়।
কোনো অভিজ্ঞ জিম বা যোগাসন ইনস্ট্রাকটরের তত্ত্বাবধানে শরীরের বাড়তি ওজন ঝরিয়ে ফেলা এবং তা বজায় রাখাই কিন্তু ‘হ্যাপি পিরিয়ড’ ডেকে আনতে পারে। খাবারের কথাই যদি বলতে হয় তাহলে প্রথমেই মিষ্টি, চা, কফি, কোলা জাতীয় ড্রিংক যতটা সম্ভব কম খান।
একেবারেই না খেলে আরো ভালো। পানি পান করুন বেশি করে। এছাড়া ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্টের দিকেও নজর দিন। মেনস্ট্রুয়াল ক্র্যাম্পস বা পিরিয়ডের ব্যথা এড়ানোর জন্য মিল প্ল্যানিংয়ের সাহায্য নিন।
খুব একটা সময় লাগবে না। শুধু কাল কী খাবেন সেটা আজই পরিকল্পনা করে রাখুন। ডায়েট ফুডের পরিবর্তে সাধারণ স্বাস্থ্যকর খাবারের উপরেই জোর দিন। তবে রান্নার উপকরণ যত তাজা হবে ততই ভালো।
তাজা ফল বা সবজি যতটা পারেন খান। এতে ওজনও কমবে, শরীর তার প্রয়োজনীয় পুষ্টিও পাবে। পিরিয়ডের আগের সপ্তাহ বা পিএমএস শুরু হবার আগে থেকেই ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট ডবল করে দিন।
পিরিয়ডের সময় ব্যায়ামের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। ভারী ব্যায়ামের পরিবতেঅ যোগাসন করুন। প্রয়োজনে ট্রেনারের কাছে জিজ্ঞেস করে নিন পিরিয়ডের সময় কোন আসন আপনার তলপেটের ব্যথা কমিয়ে রিল্যাক্স করতে সাহায্য করবে।
খাবারের টিপস –
- খাদ্যতালিকা থেকে জরুরি ফ্যাট যেমন বাদাম, পনির, ঘি পুরোপুরি কখনোই বাদ দেবেন না। এই খাবারগুলো শরীরে পুষ্টি যোগায় এবং অপ্রয়োজনীয় ফ্যাট কমাতেও সাহায্য করে।
- তাজা ফল আর সবজি যেন প্রতিবেলার খাবারেই থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। ফল না কেটে গোটা খাওয়ার চেষ্টা করুন।
- বেশিক্ষণ খালি পেটে থাকবেন না। ঘুমাতে যাবার সময় রোজ রোজ পাল্টাবেন না। চেষ্টা করুন একই সময়ে শুতে যেতে। বেশি রাত করে খাবেন না। এতে হজমে গোলযোগ হতে পারে।
- ব্যায়ামকে কখনো হালকাভাবে নেবেন না। সব সময় দিনে ১৫-২০ মিনিট ব্যায়াম আপনার শরীরের জন্য যথেষ্ট নাও হতে পারে। ট্রেনারের সাথে কথা বলে সময় ঠিক করে নিন। ফিটনেস লেভেল ঠিক থাকলে ব্যথা থেকেও রেহাই পাবেন।