জাহাজে থাকা কন্টেইনারে করে যেভাবে মালয়েশিয়ায় গেল সেই কিশোর রাতুল

সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রাম থেকে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া একটি জাহাজের কন্টেইনারে এক কিশোরের সন্ধান পাওয়া যায়। ওই কিশোর ৪ দিন ধরে কন্টেইনার আটকা পড়ে মালয়েশিয়ার কেলাং বন্দরে পৌঁছে। ঐ জাহাজের ক্যাপ্টেন কন্টেইনারের মধ্য থেকে ঐ কিশোরের চিৎকার শুনে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে সেখানকার পুলিশকে খবর দেয়। এরপর তাকে সেখানকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করে।

মালয়েশিয়ার কেলাং বন্দরে একটি খালি কন্টেইনার থেকে উদ্ধার হওয়া ওই কিশোরের বাড়ি কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার ঝলম দক্ষিণ ইউনিয়নের সাত পুকুরিয়া এলাকায়। সে ওই এলাকার দিনমজুর ফারুকের ছেলে রাতুল (১৪)।

শনিবার বিকেলে রাতুলের বাবা দিনমজুর ফারুক মিয়া ও স্থানীয় বাসিন্দারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ফারুক মিয়া বলেন, টিভিতে রাতুলের ছবি দেখে আমরা তাকে শনাক্ত করেছি। মাস দুয়েক আগে মানসিক ভারসাম্যহীন রাতুল বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। আমি ভেবেছিলাম সে এক সময় নিজেই ফিরে আসবে, তাই আমি আর জিডি করিনি। আমি সেদিন ওকে টিভিতে দেখে চিনতে পারি, এটা আমাদের হারিয়ে যাওয়া রাতুল।

ফারুক মিয়া জানান, তিন সন্তানের মধ্যে রাতুল সবার বড়। ছোটবেলা থেকেই সে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন। কয়দিন পরপর এদিক সেদিক চলে যায়, আবার ফিরে আসে। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আপনারা যেভাবেই হোক আমার ছেলেটাকে ফিরিয়ে আনুন।

ইউপি সদস্য মো. শহিদুল্লাহ বলেন, টিভিতে রাতুলের ছবি দেখে তার বাবা ফারুক মিয়া আমার কাছে আসেন। আমিও ভালো করে দেখে নিশ্চিত হলাম এটা ফারুকের ছেলে রাতুল। রাতুলকে তার বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ করছি।

ঝলম দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান হাওলাদার বলেন, ছেলেটির ছবি পেয়ে আমি সাত পুকুরিয়া গ্রামের একজনের কাছে পাঠালে তিনি শনাক্ত করেন। ছেলেটিকে ফিরিয়ে আনতে আমরা আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

মনোহরগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি শফিকুর রহমান বলেন, আপনাদের (সাংবাদিকদের) মাধ্যমে খবর পেয়ে এলাকায় গিয়ে তার পরিচয় শনাক্ত করেছি।

প্রসঙ্গত, রাতুল ১২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়ে যাওয়া জাহাজ ‘এমভি ইন্টেগ্রা’ এর একটি খালি কন্টেইনারে আটকা পড়ে। পরে ১৬ জানুয়ারি মালয়েশিয়ার কেলাং বন্দরে একটি খালি কন্টেইনার জাহাজের ভেতর থেকে নাবিকরা শব্দ শুনতে পান। তখন কেলাং বন্দরকে খবর দেওয়া হয়।

পরের দিন বুধবার অর্থাৎ ১৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী রাত ১০টার দিকে ঐ কন্টেইনারবাহী জাহাজটি জেটিতে ভেড়ে । এরপর জাহাজটির একজন কন্টেইনারের ভেতর থেকে মানুষের কন্ঠ শুনে তিনি জাহাজের ক্যাপ্টেনকে খবর ষেয়।কন্টেইনার খোলার পর মানসিক প্রতিবন্ধী কিশোরকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে। জানা গেছে, রাতুল এখন মালয়েশিয়ায় রয়েছে এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

Exit mobile version