জেনে রাখুন

মানব দেহের ওপর সুপারমুনের ৪ টি অদ্ভুত প্রভাব!!

আজ রাতের আকাশে দেখা যাবে সুপারমুন। সুপারমুন নিয়ে ইদানিং আমাদের সবারই কম বেশি আগ্রহ আছে। পৃথিবীর খুব কাছাকাছি চলে আসা চাঁদের কারণে এই অন্যরকম সুন্দর পূর্ণিমা ঘিরে নানা রকম প্ল্যানও থাকে কারো কারো। নদীর পাশে প্রিয়জনের হাত ধরে বসে থাকা বা বন্ধুরা মিলে সারারাত জোছনায় ভেজা। সুপারমুন দেখার সেরা সময় হলো সন্ধ্যার ঠিক পর পর। যখন চাঁদটা ঠিক আকাশে উদয় হতে থাকে।তবে আগের দিনের নানী দাদীদের কাছে পূর্ণিমা আর অমাবস্যা নিয়ে কিন্তু ভারী কড়াক্কড় কিছু নিয়ম কানুন শুনতে পাওয়া যায়। এটা করা যাবে না, ওটা খাওয়া যাবে না। কুসংস্কার মনে হলেও, আপনার শরীরের উপর কিন্তু চাঁদের একটা প্রভাব আছে! আর পূর্ণিমা বা সুপারমুন হলে তো কথাই নেই! তবে তা অবশ্যই ভালো কিছু!

জেনে নিন আপনার শরীরের উপর সুপারমুনের অজানা অদ্ভুত চারটি প্রভাবের কথা!

১। বাচ্চা প্রসবের ক্ষেত্রে থাকতে পারে সুপার মুনের ভূমিকাঃ

এটি সাধারণত সাধারণ পূর্ণিমায় নয় বরং সুপারমুনের ক্ষেত্রে ঘটার সম্ভাব্য একটি বৈশিষ্ট্য। গবেষকরা দেখেন জাপানের কিয়োটো শহরের একটি হাসপাতালের ১০০০ শিশুর জন্ম হয়েছে যখন সুপারমুন একটু একটু করে পৃথিবীর আরো কাছাকাছি চলে আসছিলো এবং যখন মহাকর্ষীয় বল তার চূড়ান্ত মাত্রায় পৌঁছে গিয়েছিল। অথচ সেই দিন শিশুগুলোর ভূমিষ্ঠ হবার কথা ছিলো না। কিন্তু সাধারণ পূর্ণিমার ক্ষেত্রে এমনটা দেখা যায় নি।

২। এটি নারীর ঋতুস্রাবকে নিয়মিত করাতে প্রভাব রাখেঃ

সাধারনত একজন সুস্থ সবল নারীর নিয়মিত ঋতুস্রাব ২৮ দিন পর পর হয়ে থাকে। যা চন্দ্রের আবর্তনের সাথেও সম্পৃক্ত। বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন আদিবাসী গোত্রের নারীরা যারা ক্যালেন্ডার ব্যবহার করেন না, তারা এই চন্দ্রের আবর্তনের হিসেব কষেই হিসেব রাখেন তাদের ঋতুস্রাবের। ২০১১ সালে Acta Obstetricia et Gynecologica Scandinavica নামক জার্নালটি ১৬-২৫ বছর বয়েসী ৮২৬ জন নারীর ওপর গবেষণা করে দেখেন, প্রায় ৩০% নারীরই ঋতুস্রাব হয়েছে পূর্ণিমার দিন।

৩। এটা আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারেঃ

জোছনা রাতে আপনার যদি ঘুম না আসে, সেটা কিন্তু আপনার দোষ নয় আর আপনি তার দায় চাপাতে পারেন চাঁদের ঘাড়েই! কেননা কথাটা একটুও মিথ্যে নয়। কারেন্ট বায়োলজি নামক জার্নালের এক গবেষণায় বেশ মজার কিছু তত্থ্য উঠে আসে। এখানে ৩৩ জন মানুষকে একটি কক্ষে নিয়মিত থাকতে, খেতে ও ঘুমুতে দেয়া হয়। সেখানে কোন ঘড়ি ছিলো না ও বাইরের আলো প্রবেশ বন্ধ ছিলো। ফলে তারা বুঝতে পারতো না এটা রাত না দিন। দেখা গেছে, পূর্ণিমার চার দিন আগে ও পরে এই মানুষেরা গভীর ঘুমে তলিয়ে যেতে ৫ মিনিট বেশী সময় নিয়েছে, ২০ মিনিট কম ঘুমিয়েছে এবং ৩০% কম ভালো ঘুম ঘুমিয়েছে। মেলাটোনিন নামক হরমোন যা ঘুম কমিয়ে দেয় এটি বেশি পরিমাণে নিঃসৃত হয়েছে তাদের দেহে।

৪। সার্জারির ক্ষেত্রে দ্রুত আরোগ্য্ঃ

Interactive Cardiovascular and Thoracic Surgery নামক জার্নালটির ২০১৩ সালের গবেষণায় দেখা গেছে, পূর্ণিমার সময় যেসব রোগীর সার্জারি বা অপারেশন হয় তারা অন্য সময়ের রোগীদের তুলনায় দ্রুত আরোগ্য হন ও তাদের মৃত্যুহার তুলনামূলক কম থাকে। পূর্ণিমার সময় হার্টের সার্জারি হওয়া রোগীরা মাত্র ১০ দিন হাসপাতালে ছিলেন, সাধারণ সময়ে সার্জারি হওয়া রোগীদের তুলনায় ৪ দিন কম! সুতরাং দ্রুত সুস্থ হতে চাঁদের দিকে ভালোবেসেই চোখ রাখুন!
সুপারমুন নিয়ে ভালোবাসা আপনার স্বাস্থ্যের জন্যেও হোক ভালো কিছু! ভালো থাকুন!

Related Articles

Back to top button