নারীর স্বাস্থ্যশিশুর স্বাস্থ্যস্বাস্থ্য খবর

শিশুকে যৌন নির্যাতন থেকে রক্ষায় প্রতিটি অভিভাবক অবশ্যই যা করবেন

যৌন নির্যাতনের হার দিন দিন বেড়ে চলছে উদ্বেগজনক হারে, যার বেশির ভাগ শিকারই হচ্ছে শিশুরা। বাসা বাড়ি, পথ ঘাট এমনকি স্কুলের মতো স্থানেও শিশুরা বিকৃত রুচির মানুষজন দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত। তবে সবচাইতে দুঃখজনক ব্যাপার হলো নানা জরিপের ফলাফলে জানা যায় শিশুদের প্রতি যে যৌন নির্যাতন করা হয় তার নির্যাতক বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পরিবারের নিকটতম সদস্য হয়ে থাকেন।

যদি বড় কোনো মানুষ এই ধরণের ঘটনার শিকার হন তাহলে তারা বুঝতে পেরে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারেন কিংবা কাউকে বলে বুঝাতে পারেন তার সাথে কী ধরণের আচরন হচ্ছে। কিন্তু একটি শিশু এই ধরণের ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানে না। তারা বলে বোঝাতেও পারে না কাউকে। আবার অনেক নির্যাতক ভয় দেখিয়ে শিশুটির মুখ বন্ধ রাখতে বাধ্য করে। কিন্তু মুখ বন্ধ রাখলে এই সমস্যা আরও বেড়ে যায় এবং বাচ্চাদের মানসিক অবস্থার অনেক অবনতি ঘটে। তাই এই ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অভিভাবকদের হতে হতে সতর্ক। নিজের শিশুটিকে এই ধরণের ঘটনা সম্পর্কে শিক্ষা দিতে হবে। ছেলে কিংবা মেয়ে শিশু উভয়কেই এই ধরণের যৌন নির্যাতন থেকে রক্ষা করতে তাদের প্রস্তুত করতে হবে।

(১) শিশুকে যৌন নির্যাতন সম্পর্কে আগে থেকেই শিক্ষা দিন। তাদেরকে বলুন কেউ যদি তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার দেহ স্পর্শ করে তাহলে তা বাবা মায়ের কাছে খুলে বলতে। ভয় বা লজ্জা না পেতে।

(২) তাদের শিক্ষা দিন শরীরের অঙ্গ সম্পর্কে। মানসিক ভাবে প্রস্তুত করুন নিজের শিশুকে। ৩ বছরের বেশি বড় বাচ্চাকে শিক্ষা দিন গোপন অঙ্গগুলো সম্পর্কে। তাদেরকে বোঝান এই সকল অঙ্গে কেউ স্পর্শ করলে যেন তারা তা নিজের বাবা মায়ের কাছে বিনা সংকোচে খুলে বলে।

(৩) যদি আপনার চঞ্চল বাচ্চাটি হঠাৎই চুপচাপ হয়ে যায় তবে অবশ্যই আপনার তার সাথে কথা বলা উচিৎ। তার পাশে বসে খুব ভালো করে ঠাণ্ডা মাথায় তাকে প্রশ্ন করুন, কথা বের করার চেষ্টা করুন। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সব কিছু জানতে চান।

(৪) আপনি আপনার শিশুটিকে সাথে নিয়ে কোনো আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে যেতে চাইলে যদি আপনার শিশুটি যেতে অস্বীকৃতি জানায় তবে তাকে জোর করবেন না। তার মনোভাব বুঝতে চেষ্টা করুন এবং বোঝার চেষ্টা করুন তার অনীহার কারণ কোনটি।

(৫) অনেক সময় মজা করে অনেকে ছোট শিশুকে নিজের স্বামী বা স্ত্রী বলে মজা করে থাকেন। আত্মীয় স্বজন কিংবা পাড়া প্রতিবেশীদের সাথে মজার সম্পর্ক থাকলে এই কাজটি বেশি হয়। এই ধরণের ঘটনা দেখলে অবশ্যই তা বন্ধ করুন। কোনো অবস্থাতেই এই কাজটি হতে দেবেন না। খারাপ কিছু না হলেও এই জিনিসটি বাচ্চাদের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলে।

(৬) বাচ্চার সাথে ভালো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করে নিন। এতে করে আপনার বাচ্চা যেকোনো সমস্যা, ভয় আপনাকে জানাবে। মনে রাখবেন, আপনার সতর্কতা আপনার শিশুটিকে বাঁচাতে পারে কোনো বিকৃত মানুষের হাত থেকে।

Related Articles

Back to top button