পুরুষের স্বাস্থ্য

বয়ঃসন্ধিকালে কিশোরদের মনোশারীরিক নানা পরিবর্তন

বয়ঃসন্ধিকালে কিশোরদের মনোশারীরিক নানা পরিবর্তন ঘটে। বালকের শারীরিক পরিবর্তনসমূহ আরম্ভ হয় ১১ বছরের দিকে এবং তা ২০ বছর পর্যন্ত চলতে পারে। শরীর ঠিকমতো বা অন্যদের মতো বাড়ছে না, এরকম একটা চিন্তা অনেক বালকই করে। মনে রাখা দরকার যে,সময়ের ব্যাপারটা একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম। কারো বয়ঃসন্ধিকাল একটু আগে কারো বা একটু পরে শুরু হয়। আপনি আপনার নিজস্ব গতিতে বয়ঃসন্ধিকাল অতিক্রম করবেন।
মানসিক বা শারীরিক যে আমূল পরিবর্তন আসে তার মূল কারণ হচ্ছে পুরুষালি হরমোন যাকে আমরা বলি টেস্টোস্টেরন। এ হরমোন টেস্টিস বা শুক্রাশয়ের ভেতরে তৈরি হয়। এই শুক্রাশয়টি আবার ঝোলামতো অন্ডথলির অভ্যন্তরেই অবস্থান করে।
শুক্রাশয়
টেস্টোস্টেরন হরমোনের পরিমাণ যত বাড়ে স্ক্রুটাম বা অন্ডথলির বর্ণ ততো গাঢ় হয়। পেনিস ও শুক্রাশয় বাড়তে আরম্ভ করে। পরবর্তীতে বগলের নিচে চুল ও দাড়ি গোঁফ গজাতে শুরু করে। গলার স্বর একটু গম্ভীর ও কখনো কখনো একটু ভাঙ্গা থাকতে পারে। গলায় যে স্বরথলি বা ল্যারিংস বিদ্যমান তা বড় হতে থাকে। অনেক বালকের বুকে বোঁটার নিচে সামান্য চর্বি জমতে পারে পরবর্তীতে তা আপনা আপনিই দূর হয়ে যায়।
ইতিমধ্যে টেস্টিকল বা শুক্রশয়দ্বয় স্পার্ম বা শুক্রাণু উৎপন্ন করা শুরু করে। এটা পরবর্তী পুরো জীবনব্যাপী ঘটতে থাকে। শুক্রকীট বা শুক্রাণু মূলত অবস্থান করে বীর্য বা সিমেনে যা কিনা এক ধরনের সাদা তরল জাতীয় রস। অনেক সময় নিদ্রাকালীন অবস্থায় পেনিস উত্তেজিত হয়ে তা দিয়ে বীর্য বের হয়ে আসে। এটাকে বলা হয় ওয়েট ড্রিম বা ভেজা স্বপ্ন বা স্বপ্নদোষ। এটা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক শারীরবত্তীয় ব্যাপার।
স্বপ্নদোষ
দেহের শারীরিক অবস্থা যেমন উচ্চতা, রঙ বা জাতি ইত্যাদি বিষয় দিয়ে বিবেচনা করে কেউ কেউ পুরুষের পেনিসের সাইজ বা আকার বলে দেয়ার চেষ্টা করেন। এটি কিন্তু একদম ভ্রান্ত ধারণা। সমাজে প্রচলিত আরেকটা ধারণা হচ্ছে, পেনিসের আকার বড় হলেই বুঝি পার্টনারকে বা যৌনসঙ্গীকে বেশি যৌনতৃপ্তি দিতে পারবে এবং নিজেও বেশি যৌনতৃপ্তি পাবে।
পেনিসের উত্থান মাঝে মাঝে হঠাৎ করে অপ্রত্যাশিত সময়ে হতে পারে। এটা অস্বস্তিকর হলেও কিন্তু একেবারেই স্বাভাবিক একটা শারীরবৃত্তীয় ব্যাপার। তবে স্বাস্থ্যবান থাকার জন্য ও বীর্যস্খলন ঘটানোর জন্য যে কাম বা যৌন আচরণ করতেই হবে এমন কোনো কথা নেই।
মেচতা বা ফুসুকড়ি জাতীয় সমস্যাও বালকদের মাঝে কমন। সাবান দ্বারা পরিষকার পরিচ্ছন্ন থাকুন, অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার পরিহার করুন-কোনো ড্রাগ স্ট্রোর থেকে বেনজায়িল পারঅক্সাইড ক্রয় করুন অথবা কোনো ডাক্তারের পরামর্শ নিন। শরীরের দুর্গন্ধও মূলত ঘামজনিত সমস্যা থেকেই হয়। এসব ক্ষেত্রে নিয়মিত কয়েকবার গোসল এবং ডিওডরেন্ট ব্যবহার করা যেতে পারে।
অধিকাংশ বালক ১২-১৫ বছরের মাঝে খুব দ্রুত বৃদ্ধি লাভ করে। ১৮ বছরের পরে সাধারণত বৃদ্ধি বন্ধ হলেও মাংসপেশি ঠিকই বিকশিত হওয়ার সুযোগ থাকে।
বয়ঃসন্ধিকাল বালকদের জন্য যৌন আনন্দ আর যৌন অনুভূতি ও কল্পনার বয়স। এই অনুভূতিগুলো সাময়িকভাবে দ্বিধান্বিত হতে পারে। কোনো কোনো বালকের নিকট এটা চিন্তার ব্যাপার আবার কেউ হয়ত এটাকেই খুব উপভোগ করে।

Related Articles

Back to top button