স্বাস্থ্য টিপস

গরমে সুস্থ থাকতে যে নিয়ম গুলো মেনে চলবেন

গ্রীষ্মের রোদ্দুরে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে পুরুষদের চেয়ে নারীরা বেশি অস্বস্তিতে ভুগে থাকেন। কারণ একজন পুরুষ যত্রতত্র গরমে বদলাতে পারেন তার দেহের পোশাক, কিন্তু নারীরা পারেন না। এ ছাড়া নারীদের শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমার কারণে গরম অনভূত হয় বেশি।

গরমে সুস্থ থাকতে যে নিয়ম গুলো মেনে চলবেন

চল্লিশোর্ধ নারীদের রজঃনিবৃত্তির পরবর্তী সিনড্রোমে এমনিতেই উসকে দেয় যেন আরো। যেসব নারী গর্ভনিরোধক বড়ি খেয়ে থাকেন, গরমে তাদের অসহ্যতাও বেড়ে যায়। বিভিন্ন ধরনের সাজগোজের কারণে শরীরে বাতাস ঢুকতে বাধা পায়, এতে গরম বেশি লাগে। গরমে অসুস্থতার হার বেড়ে যায় খুব। মাথা ঘোরা, মাথাব্যথা, মাথা ঝিম ঝিম করা, বমি বমি ভাব, বমি ও দুর্বলতা বিভিন্ন উপসর্গ লেগেই থাকে। কারো কারো গরমে ঘাম বসে গিয়ে কাশি হয় খুব। তাই গরম থেকে রেহাই পেতে কী করণীয় নারীদের।

যত কম প্রসাধন মাখুন
প্রসাধনে শরীরের লোমকূপ আটকে যায় বলে বাতাস ঢুকতে অসুবিধা হয়। তা ছাড়া শরীরের ঘামও বাতাসের সংস্পর্শে বেরিয়ে আসতে পারে না। কোনো কোনো প্রসাধনীতে তৈলাক্ত উপাদান থাকে বলে সেটা কারো ক্ষতির কারণ হয়ে দেখা দেয়। একমাত্র সানস্ক্রিন ক্রিম ছাড়া আর কিছু না মাখাই শ্রেয়। তবে সানস্ক্রিন ক্রিম শুধু মুখে নয়, শরীরের উন্মুক্ত স্থানগুলোতেও মাখতে হবে। কড়া পারফিউম ব্যবহার করা যাবে না। হালকা করে পাউডারের প্রলেপ দিতে পারেন।

বেশি করে সালাদ খান
সালাদ ঠাণ্ডা রাখে শরীরটাকে। দুঃসহ গরমে বেশি করে সালাদ খান। চর্বিজাতীয় খাবার এসময়ে খাবেন না। বিভিন্ন ধরনের সবজি খাবেন। যেসব নারীর শরীরে মেদ জমে আছে, এই গরমে তাদের ক্ষেত্রে মেদ কমানোর উপযুক্ত সময়। খাবারের ওপর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আসুন এ সময়ে। কম খান।

বেশি খেলে পরিশ্রম হয় বেশি। তা ছাড়া বেশি খেলে জমতে থাকে মেদের স্তূপ। কিন্তু সালাদ বেশি খেলে ক্ষতি নেই। বরং ভালো। গরম মোকাবেলার পাশাপাশি আপনার শরীরের মেদও কমিয়ে দিতে পারে সালাদ।

বেশি করে পানি খান
গরমের হাত থেকে রেহাই পেতে পানির বিকল্প নেই। হাতের কাছে সব সময় পানির পট রাখবেন। প্রচুর পানি খাবেন এ সময়। তৃষ্ণা না পেলেও খাবেন। ঠাণ্ডা থাকবে শরীর। প্রয়োজনে ফ্রিজে রাখা পানি খান। এক চুমুক ঠাণ্ডা পানি আপনার শরীরে বইয়ে দেবে চমত্কার শীতল অনুভূতি। মাঝে মাঝে হাত দিয়ে মুখমণ্ডলে ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দেবেন। ভালো লাগবে।

সুতির কাপড় পড়ুন
গরমে সিনথেটিক কাপড় পরবেন না। বাসায় সুতির ম্যাক্সি পরে থাকুন। কখনো টাইট পোশাক পরবেন না। সাদা পোশাক পরুন। অন্তর্বাসগুলোও যেন সুতির হয়। সিনথেটিক এবং টাইট পোশাকে শরীরে জমে উঠবে ঘাম। শরীরের ভাঁজে ভাঁজে ঘাম জমা হয়ে সৃষ্টি হবে চুলকানিসহ বিভিন্ন চর্মরোগ। সেই সাথে গরমে অসহ্যতা তো আছেই। সে ভয় নেই সুতির সাদা কাপড়ে। সুতির দুধা পোশাক আপনাকে ঠাণ্ডা রাখবে।

লেবুর শরবত খান
গরমে লেবুর শরবত হতে পারে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য এক চমৎকার পানীয়। শরবতে একটু লবণ ও চিনি মিশিয়ে নিন। চিনি শক্তি জোগাবে, আর লবণ পূরণ করবে আপনার শরীর থেকে ঘামের সাথে বেরিয়ে যাওয়া লবণের অভাবটুকু। লেবুতে থাকে ভিটামিন সি। এই গরমে ভিটামিন সি ফিরিয়ে দেবে আপনার লাবণ্যতা।

ঘরটাকে ঠাণ্ডা রাখুন
লোডশেডিংয়ের ঝামেলায় দুঃসহ গরমে আপনার ঘর ঠাণ্ডা রাখার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা নিতে হবে। দরজা-জানালায় সাদা রঙের পর্দা টানান, যাতে বাইরে থেকে ঢুকতে না পারে সূর্যের তীব্র আলো। মেঝেতে ঠাণ্ডা পানি ঢালুন। পর্দাগুলোও ভিজিয়ে দিন পানি দিয়ে। আপনার ঘরের মাথার ছাদেও পানি ঢালার ব্যবস্থা করুন। ছাদের ওপরে ছাদজুড়ে শামিয়ানা টানিয়ে নিন।

চুল ড্রাই করবেন না
গরমে চুল ড্রাই করবেন না। তাতে গরম বেশি লাগবে, এমনকি তেলও মাখবেন না। শ্যাম্পু করুন নিয়মিত, ঝরঝরে লাগবে নিজেকে। প্রতিদিন গোসল করুন কয়েকবার। চুলগুলো ছড়িয়ে রাখুন। তাতে বাতাস লাগবে মাথায়। মাঝে মাঝে কলার মোচার মতো করে খোঁপা করুন, যাতে ঘাড় ও কাঁধে বাতাস লাগতে পারে। তবে খোঁপা করে বেশিক্ষণ রাখবেন না। বেশিক্ষণ খোঁপা করে রাখলে টাইট চুলের ফাঁক দিয়ে মাথার ত্বকে বাতাস পৌঁছতে পারবে না।

Related Articles

Back to top button