পুরুষের স্বাস্থ্য

হাইড্রোসিল বা একশিরা রোগ কারণ প্রতিকার

পুরুষের অন্ডকোষের বাহিরের দিকে একধরণের পর্দা থাকে যাকে বলা হয় টিউনিকা ভেজাইনালিস। যখন এই টিউনিকা ভেজাইনালিসের মাঝে পরিসড়ার তরল জমতে থাকে তাকে হাইড্রোসিল বলে। প্রাইমারী হাইড্রোসিলের ক্ষেত্রে ব্যথাহীন ভাবে ক্রমশ অন্ডথলি বড় হতে থাকে। সব সময় টিউনিকা ভেজাইনালিসের দুইটি স্তরের মধ্যে কিছু তরল পদার্থ নিসৃত হতে থাকে। আবার যেই মাত্রায় এই তরল পদার্থ নিসৃত হয় একই মাত্রায় তা পরিশোষিত হয়। যদি পরিশোষণ থেকে এই নিঃসরণের মাত্রা বেশী হয় তখন টিউনিকা ভেজাইনালিসের দু’টি স্তরের মাঝে তরল জমা হতে থাকে যাকে বলা হয় হাইড্রোসিল। ছবি লিঙ্ক

হাইড্রোসিল বা একশিরা রোগ পুরুষের এমন একটি সমস্যা যাতে পুরুষের অন্ডথলির এক দিক বা উভয় দিক ক্রমশ তরল জাতীয় পদার্থ জমা হয়ে বড় হতে থাকে। সাধারণত কোন কারণ ছাড়াই এই রোগ দেখা দিতে পারে আবার কখনও কখনও আঘাত, অন্ডকোষের ক্যান্সারবা সংক্রমণ জনিত কারণে হতে পারে। ফাইলেরিয়া বা গোদ রোগের কারণে হতে পারে। চিকিত্সা সংক্রান্ত জটিলতা যেমন প্রষ্টেট ক্যান্সার, তেজস্ক্রিয় চিকিত্সা বা ভেরিকোসিল অপারেশনের পরে এই রোগ দেখা দেয়ার প্রবণতা বাড়ে। হাইড্রোসিল সাধারণত দুই ধরণের দেখা যায়। একধরণের হাইড্রোসিল দিনের বেলায় বড় থাকে রাত্রে ঘুমোলে সকালে ছোট হয়। এই ধরণের হাইড্রোসিলের থলির সাথে উদর গহবরের একটি যোগ থাকে। যার ফলে উদর গহবরের তরল পদার্থ দিনে কর্মব্যস্ত কালীন সময়ে হাইড্রোসিল থলিতে জমা হতে থাকে আবার রাত্রিতে যখন শুয়ে থাকে তা আস্তে আস্তে উদর গহবরে জমা ফেরত্ যায়।অন্য ধরণের হাইড্রোসিল রয়েছে যা দিনে আকার বাড়ে না বা রাত্রেও আকারে কমে না।

অর্থাত্ দিনে কিংবা রাত্রিতে একই রকম থাকে। এই ধরণের হাইড্রোসিলের থলি আবদ্ধ অবস্থায় থাকে অর্থাত্ উদর গহবরের সাথে কোন যোগাযোগ থাকে না। যদিও হাইড্রোসিল শরীরের মারাত্মক কোন সমস্যা সৃষ্টি করে না তবুও কোন কোন ক্ষেত্রে হাইড্রোসিলের সাথে ক্যান্সার থাকতে পারে আবার হাইড্রোসিলে সংক্রমণ বা আঘাতের কারণে জটিলতা দেখা দিতে পারে।

হাইড্রোসিল বা একশিরা রোগ নির্ণয়: ছবি লিঙ্ক
সাধারণত শারীরিক পরীক্ষা করে হাইড্রোসিল নির্ণয় করা হয়। অণ্ডথলি ফুলে গিয়ে বড় হয় এবং চাপ দিলে ব্যথা লাগে না। সাধারণত চার পাশের পানির কারণে অণ্ডকোষে হাত দিয়ে অনুভব করা যায় না। পেটে কিংবা অণ্ডথলিতে চাপ দিলে কখনো পানিপূর্ণ থলি বড় বা ছোট হতে পারে, এ রকম হলে বুঝতে হবে ইনগুইনাল হার্নিয়া রয়েছে।

অণ্ডকোষের চার পাশে পানি থাকে বলে অণ্ডকোষ হাত দিয়ে অনুভব করা না-ও যেতে পারে। স ক্ষেত্রে অন্য পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে। সম্ভাব্য পরীক্ষাগুলোর মধ্যে রয়েছে-
–আলট্রাসাউন্ড ইমেজিং
–পেটের এক্স-রে

হাইড্রোসিল বা একশিরা রোগ চিকিৎসা :

চিকিত্সার ক্ষেত্রে অপারেশনই শ্রেয়। বহিঃবিভাগেই এই অপারেশন সম্ভব। ছোট একটি অপারেশনের মাধ্যমে পানি ও হাইড্রোসিল থলি অপসারণ করা হয়। সাধারণত এই অপারেশন করার জন্য অজ্ঞান করার প্রয়োজন হয় না। শরীরের নিম্নাংশ অবশ করে অপারেশন করা হয়। অন্য পদ্ধতিতে সূঁচের সাহায্যে পানি অপসারণ করে সে জায়গায় কিছু ওষুধ দেয়া হয় যাতে পুনরায় পানি না জমে। এই ক্ষেত্রে প্রচন্ড ব্যথা, সংক্রমণ সহ পুনঃ প্রাদুর্ভাব জটিলতা দেখা দিতে পারে।

Related Articles

Back to top button