ভালোবাসা ও সম্পর্ক

ভালোবাসার উষ্ণতা ধরে রাখার জন্য ১৮টি সহজ পদ্ধতি মেনে চলুন

ভালোবাসার সম্পর্ক ধরে রাখার জন্য কী কী করা উচিত সে সম্বন্ধে আলোচনার কোনো সীমা নেই। কিন্তু মনে রাখা উচিত যে, উভয়ের আন্তরিকতাই এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ ক্ষেত্রে যে কয়েকটি বিষয়ে সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হবে, তা নিয়েই এক নিবদ্ধে মতামত প্রকাশ করেছেন লেখক কেট ফিগস। তিনি ভালোবাসা ও সংসার বিষয়ে পাঠকপ্রিয় বিভিন্ন বইয়ের লেখক। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে টেলিগ্রাফ।

১. অতিরিক্ত আশা করবেন না
‘সত্যিকার ভালোবাসা’ আশা করে আপনার সঙ্গীর সঙ্গে সব কিছুই যে মিলে যাবে, এমনটা আশা করবেন না। এক্ষেত্রে ভালোবাসা মানেই আপনার সঙ্গীর সঙ্গে রাজনীতি, খাবার, অর্থ, সন্তান ইত্যাদি মতামত মিলে যাবে, এমনটা অসম্ভব বিষয়। তার বদলে আপনার সঙ্গীর সঙ্গে যত বেশি পার্থক্য হবে ততই আগ্রহউদ্দীপক হবে আপনার জীবন, এমনটাই মনে করবেন। আপনার সঙ্গীর নানা বিষয়ে মতামত ও চিন্তাভাবনা বোঝার চেষ্টা করুন। তাকে পরিবর্তনের চেষ্টার চেয়ে এটা ভালো পদ্ধতি।

২. মানুষ মাত্রই ভুল করে
কেউই ভুলের ঊর্ধ্বে নয়, আর এ বিষয়টি মেনে নিয়েই আপনাকে এগিয়ে যেতে হবে। সামান্য ভুল হলেই সবকিছু যে ভণ্ডুল হয়ে যাবে এমন মনোভাব বাদ দিন। বিশেষ করে আমাদের ভালোবাসার জীবনে সব কিছুই ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখা প্রয়োজন।

৩. ‘কেন?’ জিজ্ঞাসা করার আগে জেনে নিন
প্রত্যেকের মানসিকতাতেই ভালো ও মন্দ উভয় বিষয়ই থাকে। কিন্তু এজন্য প্রত্যেক বিষয় নিয়ে তর্ক করতে হবে এমন কোনো কথা নেই। আপনার সঙ্গীর কোনো বিষয় নিয়ে আপনার মনে প্রশ্নের উদয় হলে কিংবা কোনো বিষয়ে বিরক্ত হলে তার ব্যাখ্যাটা ঠাণ্ডা মাথায় বন্ধুসুলভ উপায়ে জেনে নেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ। এতে ভবিষ্যৎ ঝামেলা এড়ানো সম্ভব হবে।

৪. যৌনতায় পরিবর্তন হয়
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যেকেরই যৌনতার অভ্যাসে পরিবর্তন হয়। তরুণ বয়সে যেভাবে যৌনতায় মত্ত হওয়ার অভ্যাস থাকবে তা মধ্যবয়সে থাকবে না। সে সময় এর গতি কমে যেতে পারে। এ বিষয়টি মেনে নিয়েই সুখী যৌন জীবন গড়তে হবে। আর এজন্য প্রয়োজন ধৈর্য ধরে সঙ্গীকে বুঝে নেওয়ার মানসিকতা।

৫. জীবন উপভোগ করুন
আমাদের সময় সীমিত আর এ সময়েই জীবন উপভোগ করে নিতে হবে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে সংসার গড়া, সন্তান নেওয়া ও অন্যান্য কাজ শেষ করার একটা তাগিদ থাকতে হবে। থাকতে হবে সঙ্গীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে একটা সুন্দর জীবন গড়ে তোলার লক্ষ্য।

৬. সবকিছু ভুলে একটু হেসে নিন
একটা ভালো হাসি ভালোবাসার ওষুধের মতোই কাজ করে। আর এ ওষুধ ম্যাজিকের মতো কাজ করবে আপনার ভালোবাসা বাড়িয়ে তুলতে। এজন্য অবশ্য অন্য সব সমস্যা ভুলে গিয়ে দুজনকেই হাসতে হবে একত্রে।

৭. চুপ করে কথা শুনুন
কোনো একটি বিষয় বা পরিস্থিতি যতই খারাপ হোক না কেন, আপনার সঙ্গীকে কথা বলার একটি সুযোগ দেওয়া উচিত। এতে তার পক্ষের যুক্তিটি বোঝা সম্ভব হবে। আদালতে অত্যন্ত গর্হিত অপরাধীরও কথা শোনা হয়।

৮. শুধু দুজনে সময় কাটান
পরিবারের সদস্য, সন্তান কিংবা বাবা-মা আপনার আশপাশে অনেকেই থাকতে পারে। কিন্তু আপনার বৈবাহিক সম্পর্ক ঠিক রাখার জন্য সবাইকে বাদ দিয়ে শুধু দুজনের কিছু সময় কাটানোর প্রয়োজন আছে।

৯. সঙ্গীর পরিবারকে মূল্য দিন
আপনার শ্বশুর বাড়ির আত্মীয়-স্বজনকে মূল্য দেওয়া সম্পর্ক ঠিক রাখার অন্যতম চাবিকাঠি। তাদের বিপদে আপনার সহানুভূতির প্রয়োজন আছে। এতে আপনার সঙ্গীও সম্মানিত বোধ করবে।

১০. গোপন অনুসন্ধান করবেন না
আপনার সঙ্গীর সোশ্যাল নেটওয়ার্ক, ইমেইল ইত্যাদিতে গোপনে হানা দেবেন না। এতে পরস্পরের বিশ্বাস নষ্ট হয়। কোনো বিষয়ে সন্দেহ হলে তার সঙ্গে আলোচনা করাই যথেষ্ট। এজন্য প্রমাণ খোঁজার দরকার নেই।

১১. মেনে নিতে হবে
প্রত্যেকেরই ভালোবাসার জীবনে নানা সমস্যা, প্রতিবন্ধকতা যেমন থাকে, পাশাপাশি থাকে সম্ভাবনাও। তাই সমস্যা মেনে নিতে হবে।

১২. নিষ্ঠুর হবেন না
সঙ্গীকে মূল্য দিন। তার প্রতি অবমাননাকর কথা বলবেন না। দেখা গেছে, যারা সঙ্গীকে হেয় করে কথা বলে, তাকে অবজ্ঞা বা অবমাননা করে তাদের সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হয় না।

১৩. নতুন ধারণা তৈরি করুন
সম্পর্ক শুরুর পর একে আর শুরু, মধ্যপর্যায় কিংবা শেষ পর্যায় হিসেবে বিবেচনা করবেন না। তার বদলে এখানে বিভিন্ন ঋতুর প্রচলন করুন। একে গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত, বসন্ত ইত্যাদি ঋতুর মতোই সংজ্ঞায়িত করুন। ভালোবাসার বিভিন্ন ঋতু আসতে পারে বলে ধরে নিন।

১৪. পরিবর্তন মেনে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকুন
প্রত্যেক মানুষই গতিশীল। তাদের মনোজগতে প্রতিনিয়ত নানা পরিবর্তন হয়। ভালোবাসা এক সময় পরিণীতি লাভ করে। এ বিষয়টি মেনে নিয়ে পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত থাকুন। একে মেনে নিন।

১৫. শুধু নিজেকে পরিবর্তিত করুন
আপনি অন্য একজন মানুষকে ভালোবেসেছেন। এক্ষেত্রে তার সবকিছু আপনার জানা আছে, এমনটাই ধরা যায়। তাই তাকে পরিবর্তিত করার চেষ্টা অমুলক। কাউকে পরিবর্তিত করার আগে নিজের পরিবর্তনই সবার আগে প্রয়োজন।

১৬. ভালো-মন্দ চিন্তা বাদ দিন
আপনার সম্পর্কের মাঝে কোনো ঝগড়ার স্থান রাখবেন না। এজন্য উভয়ের বোঝাবুঝি ও সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার তাগিদ থাকতে হবে।

১৭. ভুল স্বীকার করুন
আপনি নিজে কোনো ভুল করলে সে ভুলের দায় স্বীকার করুন। আপনার সঙ্গীও বিষয়টি বুঝবে। এতে একে অন্যের সম্পর্ক আগের তুলনায় আরও কাছাকাছি হবে।

১৮. সমস্যার মূলোৎপাটন করুন
সম্পর্কের ক্ষেত্রে সমস্যা কোনো অস্বাভাবিক বিষয় নয়। সমস্যা আসবেই। কোনো একটি সমস্যা হলে তার উৎপত্তি নিয়ে উভয়ে আলোচনা করুন। এতে সমস্যার সমাধান সহজ হবে।

Related Articles

Back to top button