খাদ্য ও পুষ্টি

পুষ্টিতে ভরপুর আমড়ার যত স্বাস্থ্য উপকারিতা

আমড়া Spondias  প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত। এর জেনেরিক নাম Hog plum,  একে গোল্ডেন অ্যাপেলও বলা হয়। এটি ল্যাটিন আমেরিকার স্থানীয় ফল হলেও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে বেশি খাওয়া হয়। পুষ্টিতে ভরপুর আমড়া আমাদের দেশের একটি জনপ্রিয় ফল।

গরমের সময়ে রাস্তার ফল বিক্রেতাদের ভ্যানে ফুলের মত করে কেটে সাজিয়ে রাখা আমড়া দেখে শিশু থেকে বৃদ্ধ যে কারোরই জিভে জল আসে। আমড়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবারে সমৃদ্ধ থাকে এবং এর ক্যালরি খুব কম থাকে। আমড়ার স্বাস্থ্য উপকারিতার বিষয়ে জেনে নিই চলুন।

১। ভিটামিন সি এ সমৃদ্ধ

আমড়া ভিটামিন সি এ সমৃদ্ধ যা একটি অত্যাবশ্যকীয় ভিটামিন ও প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। তাই আমড়ার ভিটামিন সি ফ্রি র‍্যাডিকেলের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে শরীরকে। ১০০গ্রাম আমড়ায় ৪৬.৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকে।

দৈনিক ভিটামিন সি এর চাহিদার ৩৯%-৪৯% পূরণ হয় একটি আমড়া খেলে। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং কোলাজেনের উৎপাদনে সাহায্য করে। কোলাজেন স্কিন, লিগামেন্ট, টেন্ডন ও কার্টিলেজকে স্বাস্থ্যবান রাখতে সাহায্য করে।

২। আয়রন এ সমৃদ্ধ

১০০ গ্রাম আমড়ায় ২.৮ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে। দৈনিক আয়রনের চাহিদার  ১৫.৫%-৩৫% পূরণ হয় ১০০ গ্রাম আমড়া খেলে। শরীরের সার্বিক কাজ ঠিকভাবে সম্পন্ন হওয়ার জন্য আয়রন প্রয়োজন। সারা শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ করে হিমোগ্লোবিন ও মায়োগ্লোবিন।

আর এই হিমোগ্লোবিন ও মায়োগ্লোবিন এর উৎপাদনে সাহায্য করে আয়রন। হিমোগ্লোবিন থাকে লাল রক্ত কণিকায়। তাই আয়রন জাতীয় খাবার বেশি খেলে লাল রক্ত কণিকার উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। অ্যানেমিয়া দূর করতে আমড়া খান।

৩। হৃদরোগ প্রতিহত করে

২০১০ সালে আমড়ার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ও কার্যকারিতা নিয়ে “কার্ডিওভাস্কুলার টক্সিকোলজি” এর করা সমীক্ষায় গবেষকেরা জানান যে, আমড়ায় প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে।

যাকে তারা হার্টের  ঔষধ রেমিপ্রিল এর সাথে তুলনা করেন। গবেষণায় তারা দেখেন যে, আমড়া সার্বিক কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং এজন্যই হার্টের উপর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের প্রভাবের সাথে রেমিপ্রিল এর প্রভাবের তুলনা করেন। তাই বলা যায় আমড়া খাওয়া সার্বিক হৃদস্বাস্থ্যের জন্যই উপকারী।

১০০ গ্রাম আমড়ায় ২৯ ক্যালরি থাকে। তাই ওজন কমতে সাহায্য করে আমড়া। মাড়ি ও দাঁতের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে আমড়া। আমড়াতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা খাদ্যআঁশ থাকে বলে বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে আমড়া। ত্বক, চুল ও নখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে আমড়া ফল।

ফ্লু, ঠান্ডা ও কাশি নিরাময়েও দারুণ কার্যকরী আমড়া। আমাদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আমড়া। আমড়ায় ক্যালসিয়াম থাকে বলে হাড়ের রোগ ও পেশীর খিঁচুনি প্রতিরোধেও সাহায্য করে আমড়া।

কাঁচা আমড়া টক বা টক-মিষ্টি স্বাদের হয়। পাকা আমড়া মিষ্টি স্বাদের হয়। আমড়া ফল কাঁচা বা পাকা খাওয়া যায় আবার রান্না করে বা আচার বানিয়েও খাওয়া যায়।

Related Articles

Back to top button