স্বাস্থ্য খবর

দীর্ঘদিন অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে মস্তিষ্কের ক্ষতি

যেকোনো অসুখ বা এর লক্ষণ দেখা দিলেই আমরা অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করি। জীবাণুর সংক্রমণ প্রতিরোধ ও রোগ চিকিত্সায় অ্যান্টিবায়োটিকের সঠিক প্রয়োগে বহু প্রাণঘাতী সংক্রমণ দূর করা সম্ভব। তবে সাবধান! দীর্ঘমেয়াদে এর ব্যবহার হয়ে দাঁড়াতে পারে মস্তিষ্কের ক্ষতির কারণ।

গবেষকরা অন্তত তা-ই বলছেন। অ্যান্টিবায়োটিকের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের সবচেয়ে পরিচিত সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলো, এটি পরিপাকতন্ত্রের প্রয়োজনীয় ব্যাকটেরিয়াগুলোকে বিলুপ্ত করে দেয়। বিশেষজ্ঞদের নতুন গবেষণাটি বলছে, দীর্ঘমেয়াদে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহারে এর চেয়েও কঠিন সমস্যা দেখা দিতে পারে।গবেষণায় বলা হয়, উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে ব্যাঘাত ঘটে। একই সঙ্গে বাধা পায় মস্তিষ্কের নতুন কোষ গঠন প্রক্রিয়া।

জার্মানির বার্লিনে অবস্থিত হেলমহোল্টজ অ্যাসোসিয়েশনের আওতাধীন ম্যাক্স ডেলব্রুক সেন্টার ফর মলিকিউলার মেডিসিনের গবেষকরা ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে দেখতে পান, অ্যান্টিবায়োটিক মস্তিষ্কের হিপোক্যাম্পাস অঞ্চলে (স্মৃতি সংরক্ষণে সংশ্লিষ্ট অঞ্চল) নতুন স্নায়ুকোষের গঠন থামিয়ে দেয়।গবেষণার অংশ হিসেবে গবেষকরা উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে একটি ইঁদুরের অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম (অন্ত্রস্থিত স্বতন্ত্র জীবকোষগুলোর কার্যকারিতা) বন্ধ করে দেন।

পরবর্তীতে দেখা যায়, স্বাভাবিক ইঁদুরের তুলনায় অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা ইঁদুরগুলোর মস্তিষ্কের হিপোক্যাম্পাস অঞ্চলের নতুন স্নায়ুকোষ উত্পাদন বহুলাংশে কমে গেছে। এ স্নায়ুকোষ উত্পাদন প্রক্রিয়া বা নিউরোজেনেসিসের অপর্যাপ্ততায় অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা ইঁদুরের স্মৃতিশক্তিতেও ব্যাপক অবনতি লক্ষ করা যায়। কারণ স্মৃতি সংরক্ষণ প্রক্রিয়ায় এ স্নায়ুকোষগুলো অপরিহার্য।

গবেষকরা আরো দেখতে পান, নিউরোজেনেসিস বা স্নায়ুকোষ উত্পাদন প্রক্রিয়া বিকল হয়ে পড়ায় অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগকৃত ইঁদুরগুলোর মস্তিষ্কে এলওয়াইসিক্সসিএইচআই মনোসাইটের (মস্তিষ্ক ও অন্ত্রের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী জীবকোষ) পরিমাণ কমেছে যথেষ্ট পরিমাণে।গষেকদের কাছে সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, শুধু অন্ত্রে নয়, মস্তিষ্কের কোষ উত্পাদনেও সরাসরি প্রভাব ফেলে অ্যান্টিবায়োটিক।গবেষণাপত্রটি প্রকাশ হয় সেল রিপোর্টস জার্নালে।

Related Articles

Back to top button