শরীরচর্চাশিশুর স্বাস্থ্যস্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য
সন্তানকে শেখান পরিচ্ছন্নতা
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাই হলো সুস্বাস্থ্যের মূলকথা। অপরিষ্কার শরীরে বাসা বাঁধে নানান রকমের অসুখ-বিসুখ। অপরিষ্কার পরিবেশে রোগও ছড়ায় বেশি। তাই নিজেকে তো বটেই, আশেপাশের সব কিছুই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা জরুরি। ছোট শিশুরা পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারগুলো ঠিক বুঝে উঠতে পারে না।
অনেক বাচ্চা এটা-সেটা মুখে দেয় বা নোংরা হাতে খাবার খায়। তাই ছোটবেলা থেকেই আপনার সন্তানের মধ্যে গেঁথে দিন পরিচ্ছন্নতাবোধের খুঁটিনাটি। এ ব্যাপারে মা-বাবাকে হতে হবে সচেতন। ছোটবেলা থেকেই বাচ্চাদের এমন কিছু পরিচ্ছন্নতার অভ্যাস তৈরি করে দিন, যাতে প্রাত্যহিক কাজে পরিচ্ছন্নতায় সে নিজেও সচেতন হিসেবে বেড়ে ওঠে।
হাত ধোয়া :
- অনেক বাচ্চাই খেলতে খেলতে বা বই পড়তে পড়তে অপরিষ্কার হাতে খাবার খেয়ে ফেলে। তাই প্রতিবেলা খাবার আগে ও পরে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে দিন। ক’দিন পর তাকে বলুন একা একা হাত ধুয়ে আসতে। এভাবে হাত ধোয়ার অভ্যাস করান।
- টুকটাক কিছু খাওয়ার আগেও বাচ্চাকে হাত ধুয়ে আসতে বলুন।
- প্রতিদিন স্কুলে যাবার আগে তাকে বলুন টিফিন খাবার আগে যেন অবশ্যই মনে করে হাত ধোয়।
- বাচ্চাকে জীবাণুদের ক্ষতির কথা গল্পের মতো করে বলুন। তবে বেশি ভয় দেখাবেন না।
- বাচ্চা নোংরা কিছু ঘাঁটাঘাঁটি করলে জীবাণুনাশক সাবান দিয়ে তার হাত ধুইয়ে দিন।
- বাইরে থেকে ফেরার পর নিজে সাবান দিয়ে কবজি পর্যন্ত ধুয়ে ফেলুন এবং বাচ্চাকেও ধুতে বলুন। এ অভ্যাসে জন্ডিসসহ নানা পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
গোসল করা :
- নিয়মিত গোসলে বাচ্চাদের শরীরে রক্তসঞ্চালন ভালো হয়। পেট, ত্বক এবং শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যাও কম হয়। তাই ডাক্তারের নিষেধ ছাড়া অসুস্থতার কারণে বাচ্চার গোসল বন্ধ করবেন না। এতে বাচ্চার নিয়মিত গোসলের অভ্যাস গড়ে উঠবে।
- প্রতিদিন বেবি সোপ বা শাওয়ার জেল দিয়ে বাচ্চাকে গোসল করতে শেখান। এসব ব্যবহার করলে যে প্রচুর পানি দিয়ে গা ধুয়ে ফেলতে হয়, এটাও তাকে শিখিয়ে দিন।
- অতিরিক্ত গরমের সময় বাচ্চাকে একাধিকবার গোসল করান। খেলে আসার পর বা বাইরে থেকে বেড়িয়ে আসার পর বাচ্চাকে গোসল করানো ভালো। যদি গোসল না করান তাহলে অবশ্যই হাতমুখ ভালো করে ধুইয়ে দিন।
- শরীর কী করে পরিষ্কার রাখতে হয় বাচ্চাকে এমন ভাবে শেখান, যাতে সে ছোটবেলা থেকেই নিজে নিজেই তা করতে পারে।
পোশাক এবং বিছানা পরিষ্কার রাখা :
- অপরিষ্কার কাপড়চোপড় ও বিছানা থেকে বাচ্চার পেটের অসুখ এবং ত্বকের অসুখ হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই ব্যবহৃত জামা না ধুয়ে বাচ্চাকে একাধিক বার পরাবেন না।
- বাচ্চার পোশাক নিয়মিত সাবান বা ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে নিন।
- বাচ্চার বিছানার চাদর, বালিশের কভার, মশারি কয়েক দিন পর পর কেচে দিন।
- বাচ্চা বেশি ঘামলে বারবার জামা বদলে।
- বাচ্চার বিছানা প্রতিদিন পরিষ্কার করুন। বাচ্চা একটু বড় হলে তাকে বলুন নিজের বিছানাটা গুছিয়ে রাখতে।
মনে রাখুন :
- খাবার পানি সব সময় ঢেকে রাখুন।
- বাচ্চা যাতে নোংরা হাত বা জিনিস মুখে না দেয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
- ছোট বাচ্চার ডায়াপার নিয়মিত বদলে দিন।
- বাচ্চার হাত ও পায়ের নখ নিয়মিত কেটে দিন।
- বাচ্চা খাবার মাখা হাত যাতে কাপড়ে না মোছে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
- বাচ্চা যাতে অপরিষ্কার মোজা, রুমাল বেশি দিন ব্যবহার না করে সেদিকে নজর রাখুন।
Follow Us