স্বাস্থ্যহানির কারণে যে ৫টি জিনিস নিয়মিত বদলে ফেলা উচিত
কথায় আছে, ‘ওল্ড ইজ গোল্ড’! তাই বলে যেকোনো পুরোনো জিনিসই কি ভালো? মোটেও না। বরং কিছু কিছু জিনিস নিয়মিত পাল্টে ফেলাটাই মঙ্গল। বিশেষ করে রোজকার জীবনে প্রতিনিয়ত ব্যবহৃত হয় এমন কিছু জিনিস, একাধারে ব্যবহার করতে থাকলে তা হতে পারে স্বাস্থ্যহানির কারণ। জেনে নিন এমনই কিছু জিনিসের কথা আর সময় থাকতেই হয়ে যান সতর্ক।
১. বালিশ
আপনার হয়তো খুবই পছন্দের একটা বালিশ আছে, যেটা ছাড়া আপনার ভালো ঘুমই হয় না! কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি আপনার বালিশ ছয় মাসের বেশি পুরোনো হয়, তাহলে তা হতে পারে ফুসকুড়ি ও অ্যালার্জির জন্য দায়ী। এর কারণ হলো ময়লা, তেল, পরজীবী কীট এবং ত্বকের মৃত কোষ পুরোনো বালিশে জমে যায়।
সাম্প্রতিক এক গবেষণা থেকে জানা যায়, লাখ লাখ মানুষ অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন শুধু এই কারণে যে, তারা তাদের বালিশ ও লেপ সময়মতো পাল্টাচ্ছেন না যেটা তাদের করা উচিত। তাই পুরোনো বালিশের আরামের মায়া ছেড়ে সেটা পাল্টে ফেলুন ছয় মাস অন্তর অন্তর।
২. টুথব্রাশ
টুথব্রাশ এবং অন্তর্বাস ছাড়া যার সাথে সবকিছু শেয়ার করা যায়, সে-ই না কি প্রকৃত বন্ধু! তাহলেই বুঝে নিন আমাদের জীবনে টুথব্রাশের মাহাত্ম্য! বোধহয় এ কারণেই পুরনো হয়ে গেলেও কেউ টুথব্রাশ ফেলে দিতে চান না।
কিন্তু জানেন কি, প্রতি তিনমাসে একবার টুথব্রাশ বদলে ফেলা উচিত? নয়তো যে জিনিসটি দিয়ে আপনি দাঁত পরিষ্কার করেন, সেই জিনিসটিই হতে পারে আপনার দাঁত ও মুখের ক্ষতির কারণ। কারণ গবেষকদের দেয়া তথ্যানুযায়ী, একটি টুথব্রাশে প্রায় ১০ মিলিয়ন জীবণু ও ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। এবং এগুলোই হতে পারে দাঁতের ক্ষতির কারণ। তাই তাদের পরামর্শ হলো, ভালো চান তো তিনমাস পর পর টুথব্রাশ পাল্টে ফেলুন!
৩. পানির বোতল
অতীতে খাবার পানি সংরক্ষণ করা হতো মাটির কলস, পাতিল ইত্যাদিতে। বর্তমান যুগে সে চল আর নেই। খাবার পানি ভরে রাখা হয় প্লাস্টিকের কন্টেইনার, জগ বা বোতলে। পলিথিন ও প্লাস্টিক কোনোকালেই পরিবেশবান্ধব এবং স্বাস্থ্যের অনুকূল ছিল না।
গবেষণায় এটাও দেখা গেছে যে, টানা তিন দিন প্লাস্টিকের পাত্রে পানি রেখে পান করলে তা ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই প্লাস্টিকের পাত্রে পানি সংরক্ষণ করলে তা একটানা তিনদিনের বেশি না রাখাই ভালো। আর যেহেতু আমরা রিসাইকেল করা প্লাস্টিকের বোতল বেশি ব্যবহার করি, তাই বোতলটা বেশিদিন ব্যবহার না করাই ভালো।
৪. অন্তর্বাস
টুথব্রাশের মতো অন্তর্বাসও একান্ত ব্যক্তিগত একটা জিনিস এবং সরাসরি স্বাস্থ্যের সাথে জড়িত। নোংরা, ঘামে ভেজা অন্তর্বাস জন্ম দিতে অ্যালার্জিসহ বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগের। বিশেষজ্ঞরা বলেন, অন্তর্বাস একবার পরলে সেটা না ধুয়ে দ্বিতীবার পরা উচিত নয়। এছাড়া আরামের কারণে ঢিলা অন্তর্বাসও পরিধান করা উচিত নয়। তাই যতই আরামদায়ক হোক না কেন, অন্তর্বাস ঢিলা হয়ে গেলে, অতিরিক্ত পুরোনো ও মলিন হয়ে গেলে, সেলাই বা জোড়া ছুটে গেলে তা পাল্টে ফেলা উচিত।
৫. শ্যাম্পু
শ্যাম্পু নিয়মিত পাল্টানো উচিত কি না তা নিয়ে বেশ বিতর্ক রয়েছে। নতুন কোনো শ্যাম্পু ব্যবহার করা শুরু করলে তা একমাসের আগে পরিবর্তন করা উচিত নয়। কারণ শ্যাম্পুর সাথে খাপ খাইয়ে নিতেই চুলের প্রায় একমাস সময় লেগে যায়। আবার এ কথাও সত্যি যে নতুন শ্যাম্পু ব্যবহার করলে চুল আগের তুলনায় স্বাস্থ্যোজ্জ্বল দেখায়।
মূল কথা হলো, একটানা একই শ্যাম্পু দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে চুল তাতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। তাই ভালো ফল পেতে ছয়মাস থেকে এক বছর অন্তর অন্তর শ্যাম্পু পাল্টান। তবে বিশেষজ্ঞদের মতামত হলো, মৌসুম ও আবহাওয়ার আর্দ্রতার পরিবর্তনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শ্যাম্পু বদলানো উচিত।