মোটা শিশুদের শত বিপদ
সবাই জানেন, মোটা হলে শরীরে রোগ বাসা বাঁধে৷ বাসাটা যে মানুষ বড় হলেই বাঁধে তা কিন্তু নয়৷ জার্মান গবেষকরা দেখেছেন, অল্প বয়সি শিশুরাও আজকাল শুধু মোটা হওয়ার কারণে অল্প অল্প করে এগিয়ে যাচ্ছে জটিল রোগে আক্রান্ত জীবনের দিকে৷
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জার্নাল ‘অ্যাক্টা পেডিয়াট্রিকা’-য় প্রকাশিত হয়েছে একটি নিবন্ধ, সেখানে ১০০ জন মোটা শিশুকে নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে জার্মানির ইয়েনা এবং হোহেনহাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, মুটিয়ে যাওয়া শিশুদের অনেকের পিতা-মাতাও শুরুতে বুঝতে পারেন না তাঁদের সন্তানরা ক্রমশ বড় বিপদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে৷ গবেষক দলের প্রধান ইনা ব্যার্গহাইম জানান, অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হলেও শিশুদের বেশি ওজনের কারণে যেসব রোগ হতে পারে সেগুলো নিয়ে ভাবাই হয় না, ফলে রোগনির্ণয়েও ব্যর্থ হন চিকিৎসকরা৷
গবেষকরা শুধু মোটা শিশুদের নিয়েই কাজ করেননি৷ ১০০ জন মোটা শিশুর পাশাপাশি ৫১ জন স্বাভাবিক স্বাস্থ্যের শিশুরও কিছু পরীক্ষা করেছেন তাঁরা৷ শিশুদের বয়স ছিল পাঁচ থেকে আট বছরের মধ্যে৷ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর গবেষকরা দেখেছেন স্বাভাবিক স্বাস্থ্যের শিশুদের শতকরা মাত্র ১৬ ভাগ অন্তত একটি জটিল রোগে আক্রান্ত হবার ঝুঁকিতে রয়েছে৷ মোটা শিশুদের অবস্থা অনেক খারাপ৷ তাদের শতকরা ৭৩ ভাগ ছিল একই রকমের ঝুঁকিতে৷ গবেষকরা জানান, মোটা হবার কারণে শিশুদের মধ্যে উচ্চরক্তচাপ, রক্তে চর্বি এবং কোলেস্টরেল বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে৷
সন্তান মোটা হলে অনেক বাবা-মা কম খাওয়াতে শুরু করেন৷ ‘অ্যাক্টা পেডিয়াট্রিকা’-য় প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, শিশুরা কম খেলে লাভ হয় না, উল্টো ক্ষতির আশঙ্কাই বাড়ে৷ গবেষকদের পরামর্শ একটাই – অল্প অল্প করে হলেও প্রতিদিন কোনো না কোনো রকমের শারীরিক পরিশ্রম করা৷ সেটা হতে পারে শরীর থেকে ঘাম বের করে আনে এমন খেলাধুলা কিংবা হালকা ব্যায়াম করা৷
ইনা ব্যার্গহাইম জানান, যেসব শিশুদের নিয়ে তাঁরা কাজ করেছেন, তাদের কেউ কেউ প্রতিদিন মাত্র ১৫০ থেকে ২০০ কিলো ক্যালরি অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ করতো৷ এমনিতে ছোট একটা চকলেটবার খেলেই ওই পরিমাণ ক্যালরি চলে যায় শরীরে৷ তবে প্রতিদিন এভাবে অল্প অল্প অতিরিক্ত ক্যালরি নিতে নিতেই একসময় বেশ মোটা হয়ে যায় শরীর৷ তা থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়, খেলাধুলা অথবা ব্যায়াম৷