য়ৌনতা নিয়ে আমাদের ভ্রান্ত ধারনাগুলো | ভুল ধারনা ০১
য়ৌনতা নিয়ে ভ্রান্ত ধারনাগুলো নিয়ে আলোচনা করবো। তবে এ বিষয়ে আলোচনায় অনেকগুলো বিষয় আমার একান্ত দৃষ্টিভঙ্গি এবং মতামত উল্ল্যেখ করবো, যা বাস্তবতা কিংবা অন্যমানুষের প্রেক্ষাপটে নাও কার্যকর হতে পারে।
ভুল ধারনা ০১:বাসার রাতে বিড়াল মারাঃ
আমাদের দেশে একটি অতিপ্রচলিত প্রবাদ হলো “বাসর রাতে বিড়াল মারা”। বিয়ের ঠিক আগে কিংবা বয়ঃসন্ধির পর থেকেই সকল পুরুষ মানসিক প্রস্তুতি নিতে থাকে বাসর রাতে ছল-ছাতুরী করে কিংবা আঁচাড় দিয়ে অথবা গলা টিপে; যেভাবেই সম্ভব বিড়াল মারতে হবে। প্রসঙ্গতঃ বিড়াল মারা বলতে স্ত্রীকে বশ করা (আরো সোজা কথায় স্ত্রীর সাথে বাসর রাতে শাররীক মিলন করা) বুঝায়।
প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ছেলেকে তার সমবয়সী বিবাহিত বন্ধুরা বিড়াল মারার নানান বুদ্ধি ফ্রি তে দান করে থাকে।অপর দিকে মেয়ের বড় বোন/ভাবী/দাদী শ্রেনীর আত্মীয়রা বিড়াল না মেরে স্বামী মহাশয়কে কি করে ধরাশায়ী করা যায় তার কুট-কৌশল শিক্ষা দিয়ে থাকেন।
কথার ধরনে অবশ্যই অনুমান করতে পারছেন এটি যেন একপ্রকার যুদ্ধ-যুদ্ধ পরিস্থিতি!
(অন্য বিষয় উত্থাপনের আগে এটা বলে নিতে চাই – পুরুষের পুরুষত্ব যাচাইয়ের জন্য বিয়ের রাতে শাররীক মিলন প্রয়োজনীয়। ভারতের কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে আইন করা হয়েছে – বাসর রাতে নারী শাররীক মিলনে বাধ্য থাকবে – বাসর রাতে মিলন না করা সেই দেশে দন্ডনীয় অপরাধ!)
এবার বিষয়টির সাথে সম্পর্কিত কিছু কথাঃ
মেয়েটিঃআমাদের দেশে এখনো এ্যরেঞ্জ ম্যারেজ এর প্রচলন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিদ্যমান। মা-বাবা একটি মেয়ে এবং ছেলের জোড়া ঠিক করে দেন। এরকম বিয়েতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে স্বামী এবং স্ত্রীর পরিচয় মাত্র বিয়ের এক সপ্তাহ আগে থেকে সর্বচ্চ তিন মাস পর্যন্ত হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে আরোও কম সময়ের পরিচয়ও হতে পারে। ধরুন আপনারা একদম অপরিচিত দুইজন মানুষ একটি ঘরে প্রথমবার একত্র হয়েছেন বাসরঘরে। কি করে আপনি আশা করতে পারেন জীবনের এ পর্যায় পর্যন্ত (ধরলাম ২২ বছর বয়সে মেয়েটির বিয়ে হয়েছে) আসতে গত ২২ বছর যে পুরুষটির সাথে তার দেখা হয়নি পরিচয় হয়নি তার সাথে সে একা থাকতে কি একেবারে স্বাভাবিক আচরন করতে পারবে? জড়তা একদিনে কেটে যাওয়ার মত নির্লজ্জতা (স্বাভাবিক অর্থে) বাঙালী মেয়েদের হয়ে গেছে বলে আমি মনে করিনা।
এমনকি ছেলেটি যদি পুর্ব পরিচিতও হয় – তবুও হায়া হারাতে সময়তো দরকার হবেই!
ছেলেটিঃযার জন্য এত আয়োজন, এত জনসমাগম – সে হলো বর।বিয়ে কোন পান্তা ভাত খাওয়ার মত সহজ বিষয় নয়। আগের দিন রাতে রান্না করে রাখা হলো; আর সকালে ঘুম থেকে উঠেই তৈরি খাবার খেতে বসে গেলেন! বিয়ের জন্য লম্বা একটা মানসিক এবং শাররীক ধকল শেষে আসে সেই কাঙ্খিত বাসর রাত। পরিশ্রান্ত শরীর-মনে একজন মানুষ চাইলেই বিড়াল মারা বাঘ হতে পারবে না। তাই সময় ক্ষেপন অতি জরুরী একটি বিষয়। মনেকরি ছেলেটি যুদ্ধ ঘোষনা করেই দিল – বিড়াল আমি মারবই!! একটি মেয়ে যে আপনার ঘরে সারা জীবনের জন্য আসছে তাকে কি আপনি প্রতিপক্ষ হিসেবে নেবেন, নাকি বন্ধু হিসেবে? বাসররাত একটি মিষ্টি রাত। মেয়েটিকে আপনার মিষ্টতা বুঝতে দিন – কথা বলুন, দুজনের ভাললাগা মন্দলাগা শেয়ার করুন। তাকে স্বাভাবিক হতে দিন। এবং যুদ্ধ না করে মনের সাথে মনের মিল ঘটান (শরীরের সাথে শরীর মিলিয়ে)।
পুনশ্চঃ
দয়া করে সাদা বিছানার চাদর বিছাবেন না! (ভুল ধারনা #০২ তে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো)।
এবং প্রথম বারেই গোল দেবার চেষ্টা করবেন না – যৌন মিলন এক প্রকার খেলা (প্লে)। প্রেকটিস না করে পারদর্শী হবার কোন শর্টকার্ট নেই। তাই নারীদের বলছি – প্রথম দিনই ঘোষনা দেবেন না “সে পারেনা”। তাকে খেলা শিখতে দিন – আপনিও শিখুন। (ভুল ধারনা #০৩ তে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো)।