পিরিয়ডের সময় ব্রণ যেভাবে দূর করবেন
মাসিক চক্রের বিভিন্ন পর্যায়ে হরমোনের স্তর পরিবর্তিত হয়। বিশেষত, পিরিয়ড শুরুর প্রায় এক থেকে দুই সপ্তাহ পূর্বে ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরনের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে নিম্নগামী হয়, যা ফলে গ্রন্থিগুলো স্বাভাবিক মাত্রার তুলনায় অধিক তেল উৎপাদনে প্রবণতা প্রকাশ করে।
এই অতিরিক্ত তেল মৃত ত্বকের কোষ এবং ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে মিশে ত্বকের ছিদ্রগুলোকে অবরুদ্ধ করে এবং ব্রণের উদ্ভব ঘটায়। এই ব্রণ সাধারণত স্বাভাবে সেরে যায়, তবে এর জন্য যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করা প্রয়োজন।
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস শুধুমাত্র রোগ প্রতিরোধ করতেই সহায়ক নয়, এটি ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানেও ভূমিকা রাখে। নিয়মিত ব্রণ কিংবা প্রি-মেনস্ট্রুয়াল সিন্ড্রোম (PMS)-জনিত ব্রণের ক্ষেত্রে শাক-সবজি, ফলমূল, দানাশস্য এবং স্বাস্থ্যকর চর্বিতে পরিপূর্ণ খাবার উল্লেখযোগ্য উপশম প্রদান করতে পারে। পাশাপাশি, অতিরিক্ত চিনি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য এবং অ্যালকোহল এড়িয়ে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মাসিকের সময় শুধুমাত্র পেটের ব্যথা হয় না; মেজাজ পরিবর্তন এবং ব্রণর মত অন্যান্য সমস্যাও দেখা দিতে পারে। কীভাবে মাসিকজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন, তা জানতে আমাদের নির্দেশিকা অনুসরণ করুন।
মাসিক চক্রের চার দিন মহিলাদের জন্য বেশ কিছু অসুবিধা বয়ে আনে।
এর মধ্যে পেটের যন্ত্রণা প্রধান, তবে মুড সুইং এবং অস্বস্তিও এই সময়ে সাধারণ ভাবে দেখা যায়। অতিরিক্তভাবে, অনেক সময় ত্বকের ব্রণও দেখা দিতে পারে। মাসিক চক্র চলাকালীন শরীরে হরমোনাল পরিবর্তন ঘটে যা উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে। এ কারণেই ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়।
অনেকেই মাসিক চক্রের সময়ে ব্রণজনিত সমস্যায় ভুগে থাকেন। মূলত, পিরিয়ড শুরু হওয়ার দশ-বারো দিন পূর্ব থেকেই ত্বকে ব্রণের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। কেন এই সময়ে ব্রণ হয় তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা নিম্নরূপঃ
পিরিয়ডের সময় কেন ব্রণ হয়:
এই সময়ে ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরনের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়, যার ফলে ত্বক শুষ্ক ও নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। এর পরিণতিতে ব্রণ ও বলিরেখার সমস্যাও দেখা দিতে পারে। পরবর্তী পর্যায়ে, ওভুলেশনকালে টেস্টোস্টেরন এবং ইস্ট্রোজেন হরমোনের স্তর কমতে শুরু করলে ত্বক স্বাস্থ্যোজ্জ্বল দেখা দেয়।
তবে প্রোজেস্টেরনের মাত্রা বাড়তে থাকলেই ত্বকে তৈলাক্তভাব বৃদ্ধি পায়। এর ফলে তেল জমে এবং ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধে, যা ব্রণ সমস্যার প্রকোপ বাড়িয়ে তোলে।
পরবর্তীতে, প্রিমেনস্ট্রুয়াল চক্রের সময়সীমায় উল্লেখযোগ্য হরমোনজনিত পরিবর্তন ঘটে। এই সময় ত্বক অতিরিক্ত তৈলাক্ত হয়, প্রদাহ বৃদ্ধি পায় এবং ব্রণর সমস্যাও বেড়ে যায়।
পিরিয়ডের সময় কীভাবে ত্বকের যত্ন নেবেন?
মেনস্ট্রুয়াল ফেজের সময় ত্বক হাইড্রেটেড রাখা অত্যন্ত জরুরি। বেশি পরিমাণে পানি পান করুন এবং ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম ব্যবহার করুন, কারণ এই সময়ে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। ফলিকিউলার ফেজের সময় নিয়মিত স্ক্রাবিং করা উচিত এবং একটি সুনির্দিষ্ট ও মানসম্পন্ন স্কিন কেয়ার রুটিন পালন করা প্রয়োজন।
ওভুলেশন পিরিয়ডের সময় নিজেকে পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখুন এবং এমন প্রোডাক্ট ব্যবহার করুন যা আপনাকে ব্রণ থেকে রক্ষা করবে। এই সময়ে উচ্চ-ফাইবার জাতীয় খাবার গ্রহণের পরিমাণ বৃদ্ধি করার চেষ্টা করুন, চিনি সেবন কম করে এবং কফি পান করা হ্রাস করুন। ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য হালকা মেকআপ ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়।
কী করে বুঝবেন আপনার মুখে যে ব্রণ হচ্ছে সেটা পিরিয়ড ব্রণ কিনা?
এই ব্রণ সাধারণত মাসিক ঋতুচক্রের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং তা সমাপ্তির পর কমে যায়। এটি প্রধানত গাল বা থুতনিতে দেখা দেয়। প্রাপ্তবয়স্ক ও কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়, এবং প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট সময়কালে এর প্রকোপ থাকে।