গর্ভবতীর যত্নজেনে রাখুননারীর স্বাস্থ্য

জেনে নিন জন্মনিরোধক বড়ি সম্বন্ধে কিছু জরুরী তথ্য

জন্মনিরোধক হিসেবে আপনি হয়তো পিল খাচ্ছেন, তাই নিশ্চিন্ত। হঠাৎ দেখলেন, প্রেগন্যান্সি এসে গিয়েছে। এমনটা যে হয় না, তা কিন্তু নয়। আসলে কিছু কিছু কারণে পিলের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়, বা পিল কাজ করে না। জন্মনিরোধরক হিসেবে পিল ব্যবহার করলে এই বিষয়গুলি জেনে রাখা উচিত। এই সব ক্ষেত্রে পিল খেতে খেতেও প্রেগন্যান্সি আসতে পারে।পিল খেতে ভুলে গেলে:
পিল সবচেয়ে বেশি যে কারণে কাজ করে না, তা হল পিল ব্যবহার করতে ভুলে যাওয়া। অনেকেই পিল নিয়মিত ব্যবহার করতে ভুলে যান। এটাই সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। তাতে সমস্যা হতে পারে। পিল

শুরু করার প্রথম সাত দিনের মধ্যে দুই থেকে তিন দিন ভুলে গেলে পিল না কাজ করার সম্ভাবনা বেশি।

পিল খাবার পরে বমি হলে কি করবেন?
বমি হলে শরীর থেকে পিল বেরিয়ে যেতে পারে। শরীর থেকে পিল বেরিয়ে যাওয়া আর পিল খেতে ভুলে যাওয়ার ফলাফল একই। বমি হলেও ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণুর মুক্তির সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এ রকম হলে দেখতে হবে পিল খাওয়ার কতক্ষণ পর বমি হল। পিল খাওয়ার ঘণ্টা দুই পরে বমি হলে কিছু করার দরকার নেই। তবে তার আগে হলে আরও একটি পিল খেয়ে নিতে হবে। এটিও খাওয়ার পরও যদি বমি হয়, তবে সুস্থ হওয়া অবধি অপেক্ষা করতে হবে। সুস্থ হওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে আরও একটি পিল খেয়ে নিতে হবে।

অন্য ওষুধের প্রভাব
:
বেশ কিছু ওষুধ পিলের কার্যকারীতা কমায়। তাই অন্য কোনও ওষুধ খেলে তা আপনার চিকিৎসককে জানান। নইলে পিল খেয়ে চললেও তা কাজ করবে না। এই ওষুধগুলি লিভারের মাধ্যমে কাজ করে। আর পিলও লিভারের মধ্যে দিয়ে যায় বলে অন্য ওষুধগুলি পিলকে শরীরে কাজ করতে দেয় না।

নতুন পিল খেতে শুরু করলে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয়ে থাকা খুব স্বাভাবিক। তখন কী করবেন?
সব থেকে বেশি যে সমস্যা হতে পারে, তা হল পিল শুরু করার পর পিরিয়ডের ধরণ বদলে যাওয়া। এই নিয়ে অকারণ বিভ্রান্ত হবেন না। বা ভয় পেয়ে পিল ব্যবহার বন্ধ করে দেবেন না। তাতে প্রেগন্যান্সির সম্ভাবনা বেড়ে যায়। পিলের ভেতরের হরমোনের প্রভাবে কয়েক মাস ধরে অনিয়মিত স্পটিং হতে পারে, কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই এই সমস্যা মিটে যায়। এ ছাড়া অনেকের ব্লিডিং-এর পরিমাণও কমে যায়।

যদি পিরিয়ড না হয়:
ভাল করে ভেবে দেখা দরকার পিল খেতে কি কখনও ভুলে গিয়েছিলেন? বা সম্প্রতি পেটের গণ্ডোগোল বা বমি হয়েছিল কি না। সে রকম হলে গর্ভনিরোধকের সুরক্ষা ক্ষমতা কমে যাওয়ার কথা। সুরক্ষার ফাঁক গলে কিছু হয়েছি কি না তা বুঝতে প্রেগন্যান্সি পরীক্ষা করে দেখতে হতে পারে। অনেক সময় কম মাত্রার পিলেতে প্রেগন্যান্সি না এলেও প্রথম দুই থেকে তিন মাস পিরিয়ড বন্ধ থাকতে পারে। তবে পিল বন্ধ করা চলবে না। ২১ দিন খেয়ে ৭ দিন বন্ধ রেখে আবার ২১ দিন খেতে হবে।

বমি বমি ভাব:
পিল খেলে বমি বমি ভাব হতে পারে। সমস্যা এড়াতে কিছু খাবার খেয়ে বা শোওয়ার আগে পিল খান। তাতে না কমলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভাল। এই রকম ক্ষেত্রে কম ডোজের পিল নিলে সুবিধে হয়। সঙ্গে বমি ভাব কমানোর ওষুধ কিছু দিন খেতে হবে।

যৌনক্ষমতা:
পিল ব্যবহারের পর কারও কারও যৌনক্ষমতা বেড়ে যায়। এর কারণ যাঁদের মিলনের সময় কিছু অসুবিধে তৈরি হয়, পিল ব্যবহারে তার থেকে মুক্তি ঘটে। আবার পিল ব্যবহারে কিছু মহিলার সহবাসের ইচ্ছে কমে যায়। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে বিকল্প পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে।

কিছু উপসর্গ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে সাময়িক ভাবে পিল বন্ধ করে দেবেন ও আপনার ডাক্তারকে জানাবেন
সেগুলি হল:–

যে কোনও পায়ের ডিমে বা কাফ মাসল-এ তীব্র ব্যথা, বুকের মাঝে বা দু-পাশে তীব্র যন্ত্রণা, নিশ্বাস নিতে গেলে ব্যথা বেড়ে যাওয়া, কোনও কারণ নেই, অথচ শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে, তলপেটে প্রচণ্ড ব্যথা, তীব্র মাথব্যথা ও মাইগ্রেন, অতি উচ্চ রক্তচাপ, দৃষ্টিশক্তির অস্বচ্ছতা,শরীরের একাংশে অসাড়তা দেখা দিলে।
এই সমস্যাগুলো কিন্তু পিল খাওয়ার জন্য হয় না। যে কোনও মানুষেরই হতে পারে যে কোনও অসুখের লক্ষণ হিসেবে। এই সব অসুখে পিলখাওয়া বারণ।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Related Articles

Back to top button